সাভার (ঢাকা): ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকালে গত ৫ আগস্ট সাভারে নিখোঁজ হয় জিহাদ নামের এক কিশোর। পরিবার ধারণা করেছিল, ৫ আগস্ট প্রাণ হারানো অনেকের মতো জিহাদও হয়তো মারা গেছে।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক এসআই অলক কুমার দে। এর আগে গতকাল সোমবার রাতে গাজীপুরের টঙ্গী এলাকার আবাসিক হোটেল থেকে জিহাদকে উদ্ধার করে পুলিশ। গত ১৮ আগস্ট জিহাদের বাবা বেলাল হোসেন তার ছেলে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
৭০ দিন পর উদ্ধার হওয়া জিহাদের বাবা বেলাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনে আশুলিয়ায় ব্যাপক গোলাগুলি হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে গুলি। এদিন রাতে বাড়ির পাশ থেকে নিখোঁজ হয় জিহাদ। আমরা অনেক খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে ভেবেই নিয়েছিলাম ছাত্র আন্দোলনে আমার ছেলে মারা গেছে। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর হয়তো কোনো বিপদে পড়ে জিহাদ মারা গেছে। যেকোনোভাবে ছেলের লাশটা অন্তত পেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আশুলিয়া থানার পুলিশ আমার ছেলেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে ফিরিয়ে দিয়েছে। ওই পুলিশ কর্মকর্তা আমার ছেলেকে উদ্ধারে অনেক কষ্ট করেছেন।
বেলাল হোসেন বলেন, এ ঘটনার পর পুলিশের প্রতি আমার ধারণা পাল্টে গেছে। ৫ আগস্টের প্রেক্ষাপটে পুলিশের ওপর মানুষের ভরসা এক প্রকার উঠেই গিয়েছিল। কিন্তু আমার আস্থা আরও বেড়েছে।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অলোক কুমার দে বাংলানিউজকে বলেন, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার নির্দেশে জিহাদ নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি তদন্ত শুরু করি। প্রযুক্তির সহায়তা ও বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জিহাদকে টঙ্গী এলাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার করি। সে ওই আবাসিক হোটেলে বাবা-মা হারা পরিচয় দিয়ে চাকরি নিয়েছিল।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, কিশোর জিহাদ মূলত এতদিন আত্মগোপনে ছিল। সে তার পরিবারের সঙ্গে অভিমান করে গত ৫ আগস্ট বাড়ি থেকে চলে যায়। প্রথম অবস্থায় জিহাদ একটি মোবাইল ব্যবহার করলেও পরে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। সেই মোবাইলের সূত্র ধরেই প্রযুক্তির সহায়তায় জিহাদকে নিখোঁজের ৭০ দিন পর উদ্ধার করতে সক্ষম হই। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে আজ জিহাদকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। জিহাদ আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের জিরাবো এলাকায় বাবা মায়ের সঙ্গে ভাড়া বাসায় বসবাস করতো।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০২৪
এমএম