ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

অবৈধ আয় রেখেছিলেন স্ত্রীর নামে, ফেঁসে গেলেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০২৪
অবৈধ আয় রেখেছিলেন স্ত্রীর নামে, ফেঁসে গেলেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক

টাঙ্গাইল: প্রকৌশলী স্বামীর অসাধু উপায়ে অর্জিত সম্পদ বৈধ করতে নিজের নামে রেখেছিলেন কোহিনুর বেগম।  

কিন্তু তার বৈধ কোনো আয়ের উৎস পাওয়া যায়নি।

তাই দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কোহিনুর বেগমকে প্রধান আসামি করে মামলা করেছে। মামলায় তার স্বামী প্রকৌশলী মো. শাহাদত আলীকেও আসামি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) টাঙ্গাইল স্পেশাল জজ আদালতে মামলাটির আবেদন করা হয়। আদালত মামলার আবেদনটি আমলে নিয়ে তদন্তের আদেশ দিয়েছেন। এর আগে বুধবার দুর্নীতি দমন কমিশন টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে মামলার আবেদন করেন। দুদক এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

মামলায় কোহিনুর বেগম ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে একে অপরের সহায়তায় জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ এক কোটি ৫২ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন এবং অর্জিত সম্পদকে বৈধ করার অসৎ প্রচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।

কোহিনুর বেগমের (৫২), স্বামী মো. শাহাদত আলী বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে বর্তমানে কর্মরত। এর আগে তিনি টাঙ্গাইল বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ছিলেন। তারা টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ভাওরা উত্তরপাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা।

তবে মামলার বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন  শাহাদত আলী। তিনি বর্তমানে সিলেটের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালন ও সংরক্ষণ সার্কেলের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পরিচিতি নম্বর ১-০১৩৮৫) হিসেবে কাজ করছেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৭ মে কোহিনুর বেগমকে তার নিজের ও তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিবর্গের নামে/বেনামে অর্জিত যাবতীয় স্থাবর অস্থাবর সম্পদ-সম্পত্তি, দায় দেনা, আয়ের উৎস দাখিলের জন্য দুদক থেকে নোটিশ দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ১০ জুলাই দুদক টাঙ্গাইল কার্যালয়ে তিনি সম্পদের বিবরণী দাখিল করেন। এতে দুই কোটি ১৫ লাখ ৮৯ হাজার টাকা মূল্যের স্থাবর এবং ১৮ লাখ ৮২ হাজার ৫১২ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদসহ মোট দুই কোটি ৩৪ লাখ ৭১ হাজার ৫১২ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য তিনি দেন। তার সম্পদের বিবরণ যাচাই করে এক কোটি ৫২ লাখ ৪৯ হাজার ৬৪২ টাকা আয়ের বৈধ কোনো উৎস পায়নি দুদক কর্তৃপক্ষ। যাচাইকালে দুদক কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিয়মান হয় যে কোহিনুর বেগমের চাকরিজীবী স্বামী শাহাদত আলী অসাধু উপায়ে এ সম্পদ অর্জন করেছেন। সেই অবৈধ সম্পদ বৈধ করতে উৎসবিহীন পরিমাণ সম্পদ কোহিনুর বেগম নিজের দখলে রেখেছিলেন। এছাড়া তার স্বামী মো. শাহাদত আলী ৩০ লাখ ৭৯ হাজার ৬৭৫ টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদের তথ্য সম্পদ বিবরণীতে গোপন করেন। শাহাদত জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৪৯ লাখ ৪৭ হাজার ১৫১ টাকার সম্পদের মালিকানা অসাধু উপায়ে অর্জন করে নিজের দখলে রেখেছিলেন বলে দুদকের যাচাইয়ে বের হয়ে আসে।

দুদক টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নূর এ আলম কোহিনুর বেগম ও মো. শাহাদত আলীর নামে মামলা করার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আদালত মামলাটি তদন্তের আদেশ দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০২৪
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।