ঢাকা: রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গভবনের সামনের সড়কে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সাধারণ জনতা। এতে বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নিয়েছেন।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির বাসভবনের সামনে এমন চিত্র দেখা যায়।
বিকেলে মোজাম্মেল মিয়াজি নামে এক আন্দোলনকারী বলেন, ‘আপনারা জানেন ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করার পর তিন বাহিনীর প্রধানদের নিয়ে রাষ্ট্রপতি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন। তার কাছে পদত্যাগপত্র আছে। অথচ এখন রাষ্ট্রপতি বলছেন তার কাছে পদত্যাগপত্র নেই। তার মানে এই রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন মিথ্যাচার করছেন। তিনি খুনি হাসিনার দালাল। হাসিনা যখন গণহত্যা চালিয়েছে। তখন তিনি কোনো শিক্ষার্থীকে দেখতে যাননি। শিক্ষার্থীদের পক্ষও নেননি। এই রাষ্ট্রপতি থাকলে দেশের মানুষের রক্তচুষে খাবেন। তাই তার পদত্যাগ না হওয়ার পর্যন্ত আমরা বঙ্গভবন ছেড়ে যাবো না। ’
সায়েদাবাদ থেকে জাহানারা নামে এক গৃহিণী রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে আন্দোলনে যোগ দেন। তিনি বলেন, ‘আমি সায়েদাবাদ থেকে এখানে আসছি শিক্ষার্থীদের সাপোর্ট দিতে। খুনি হাসিনার দোসর রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন। তাই এদেশে তার কোনো ঠাঁই নাই। অনতিবিলম্বে তাকে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। ’
এদিকে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বঙ্গভবনের সামনে আসেন জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ ফোরামের নেতা-কর্মীরা। তারা বঙ্গভবনের সামনে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। প্রায় ২০ মিনিট বিক্ষোভ করে তাদের মিছিলটি ৫টা ৫০ মিনিটে দৈনিক বাংলা মোড়ের দিকে চলে যায়। এসময় ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক সম্পাদক সোহেল রানা বলেন, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেখ হাসিনার দোসর ও মনোনীত ব্যক্তি। ছাত্র-জনতার সরকারে তার থাকার কোনো অধিকার নাই। অনতিবিলম্বে রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগ করতে হবে। সাহাবুদ্দিন খুনি হাসিনার দোসর হলেও তিনি আমাদের রাষ্ট্রপতি। তাকে আমরা সম্মান করি। তাই তাকে বলতে চাই, আপনি সসম্মানে চলে যান। ছাত্র-জনতার সরকারে আপনার দরকার নেই। আপনার নিজের সম্মান রক্ষার্থে আপনি নিজে পদত্যাগ করুন। অন্যথায় জনগণ আপনাকে ছাড়বে না। আপনার গদি থেকে টেনে-হিঁচড়ে নামাবে। ’
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, বঙ্গভবনের প্রধান ফটকের সামনে ও চারপাশে কাঁটাতারের ব্যারিকেড বসানো হয়েছে। যাতে করে কোনো আন্দোলনকারী ভেতরে ঢুকতে না পারেন। বঙ্গভবনের ফটকের সামনে বিপুলসংখ্যক পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, র্যাব ও বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা রয়েছেন। এছাড়া সাদা পোশাকের পুলিশসহ গোয়েন্দা বাহিনী সদস্যরা রয়েছেন। যাতে করে সেখানে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা না ঘটতে পারে। ’
এর আগে, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিভিন্ন ব্যানারে বঙ্গভবনের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শত শত আন্দোলনকারী। ওই দিন রাত সাড়ে ৮টায় বঙ্গভবনে প্রবেশের চেষ্টা করে বিক্ষোভকারীরা। এসময় সাউন্ড গ্রেনেড ও নিক্ষেপ করে পুলিশ। অন্যদিকে আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন জায়গায় আগুন ধরায়। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২৪
এমএমআই/এইচএ/