নাটোর: নতুন নির্বাচন কমিশন শপথ নেওয়ায় ধন্যবাদ জানিয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ বলেছেন, শেখ হাসিনা বেছে বেছে নির্বাচন কমিশন গঠন করতেন, যারা তার কৃতদাস হিসেবে কাজ করতেন। তাদের কাছে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো দামই ছিল না।
রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে শহরের আলাইপুরে জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন তিনি একথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছর ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন লুট-হরিলুটের সংস্কৃতি মাফিয়া লীগ তৈরি করেছিল শেখ হাসিনা। মাফিয়া লীগের পুনরাবৃত্তি বাংলাদেশে যেন আর না হয়। বিএনপি প্রত্যাশা করে এই কমিশন আগের কমিশনের মতো হবে না।
রিজভী আহমেদ বলেন, পেছনের শিক্ষা আছে, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন কীভাবে ধ্বংস করতে হয়। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন সাংবিধানিক সংস্থা। তাদের নিজস্ব ক্ষমতা আছে। নির্বাহী বিভাগের আদেশ না শোনার অধিকার তাদের আছে। কাজেই আমরা নির্বাচন ব্যবস্থার ধ্বংস চাই না। আমরা চাই জনগণের অংশগ্রহণমূলক একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন।
তিনি বলেন, একজন ব্যক্তিকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আঘাত করা বেআইনি কাজ। এটা সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, বিএনপি তো সেই দল করে না। সারা বাংলাদেশে বিএনপির নামে, বিএনপির নামধারী ব্যক্তিরা এসব কাজ করছে। এসব কাজের জন্য ছাত্রদল, যুবদলসহ বিএনপির অঙ্গসংগঠনের বহু নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কারো কারো পদ থেকে শোকজ ও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা করেছে বিএনপি।
রিজভী বলেন, বিএনপি বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। গণতন্ত্র মানেই পরস্পর সহানুভূতি ও শুভেচ্ছাবোধ। একে অপরের বিরোধ থাকতে পারে, তবে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও অধিকার থাকতে হবে। সেজন্য বিএনপি দেশের মানুষের কাছে জনপ্রিয়। বিএনপির কোনো নেতাকর্মী সংগঠনবিরোধী কোনো কার্যকলাপ, সভ্যতা ও সুরুচির বাইরে যদি কোনো কাজ করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, দেশরত্ন খালেদা জিয়াকে দেশ থেকে কখনো বিতাড়িত করা যায়নি। তিনি বার বার বলেছেন আমার ঠিকানা বাংলাদেশের মাটি। শেখ হাসিনা কত চেষ্টা করেছেন কিন্তু পারেননি। তারা নানাভাবে খালেদা জিয়াকে শারীরিক, মানসিকভাবে অত্যাচার, নির্যাতন করেছেন। তারেক রহমানের ওপর মিথ্যা মামলা, কুরুচিপূর্ণ অসত্য কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছেন। পরবর্তীকালে তাকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে।
রিজভী আরও বলেন, বিএনপির নামে এবং বিএনপির কোনো নেতাকর্মী দেশের কোথায় চাঁদাবাজি, দখল, কাউকে আটক করেছে এমনটি জেনে সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন তারেক রহমান। তার নির্দেশনা আছে সারা দেশে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী সংগঠনবিরোধী কোনো কার্যকলাপ করলে, সভ্যতা ও সুরুচির বাহিরে কেউ কাজ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় অর্থনীতি বিষয়ক সহ সম্পাদক মাহামুদুল ইসলাম, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মাজাবুবুল ইসলাম ও নাটোর জেলা বিএনপির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে দুপুরে দলের কেন্দ্রীয় নেতা মাহামুদুল ইসলাম ও মাহাবুবুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে রিজভী আহমেদ নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার কালিকাপুর গ্রামে যান। সেখানে মারধরের শিকার বনপাড়া পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক উজ্জ্বলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন এবং সান্ত্বনা দিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিনি চিকিৎসাধীন উজ্জ্বলের শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন এবং তার ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে তার জন্য পুলিশ প্রশাসনসহ দলীয় নেতাকর্মীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২৪
আরএ