ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম মুখ্য সংগঠকসহ তিন নেতাকে মারধরের ঘটনায় জড়িতদের বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে কমিটির নেতারা।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হামলায় আহতরাসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হামলায় আহত জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ। এসময় তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবুলকে গ্রেপ্তার করে তার বার কাউন্সিল সনদ বাতিল এবং জেলা পুলিশ সুপার জাবেদুর রহমানের দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগ নেতার দায়ের করা আইসিটি মামলায় ১৫ ডিসেম্বর নাসিরনগর উপজেলার নাগরিক কমিটির মতবিনিময় সভা থেকে নাসিরনগর প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান খোকনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। খবর পেয়ে তিনি আসাদুজ্জামানের জামিন করাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে যান। জামিনের পর বিকেলে কসবা উপজেলার ফয়েজ তাকে পরিচয় করিয়ে দিতে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের কক্ষে নিয়ে যান। আতাউল্লাহ আরও দাবি করেন, পরিচয় পর্বের শুরুতে পরিকল্পিত ভাবে আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবুলের নির্দেশে অ্যাডভোকেট মিনহাজ, পিয়ন কবিরসহ ১০/১২জন আইনজীবী তাদের মারধর করে। এসময় তাকে বাঁচাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংগঠক জিহান মাহমুদ ও সদর উপজেলা সংগঠক নাছিমুল রাসেল এগিয়ে এলে কক্ষের দরজা ও লাইট নিভিয়ে মারধর করে রক্তাক্ত করা হয়। পরে জেলার আন্দোলনকারী ও পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।
মো. আতাউল্লাহ তার কোনো খালা নেই দাবি করে আরও বলেন, আইনজীবী মফিজুর রহমান বাবুল জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও জুলাই হত্যা মামলার আসামি। হামলার ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে খালার পারিবারিক ঘটনার নামে মিথ্যা নাটক সাজিয়েছে আইনজীবী বাবুল ও তার সহযোগী পুলিশ সুপার। তারা এ ঘটনায় পুলিশ সুপারের দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে বলেন।
তিনি বলেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা, বিচার ব্যবস্থাকে পরিকল্পিতভাবে বিনষ্ট করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম আদালতের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালত পাড়ায় আইনজীবী সমিতির ভবনে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। তারা এ ঘটনায় জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবুলসহ জড়িত আইনজীবীদের বার কাউন্সিল সনদ বাতিল এবং তাদের সহযোগী আওয়ামী দোসরদের দ্রুত গ্রেফতারের পাশাপাশি সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান বলেন, আমরা যেভাবে ফাইন্ডিংস পেয়েছি সেভাবেই বলেছি। তিনিই পরিষ্কার করুক কেন ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। আমি একা ঘটনাস্থলে যাইনি। আমার একাধিক সিনিয়র অফিসার ওখানে গিয়েছিলেন। তাছাড়া সেনা কর্মকর্তাসহ সেনা সদস্যরাও ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ দেননি। অভিযোগ দিলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আহত কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আতাউল্লাহ ছাড়াও অপর আহত দুই সংগঠক জিহান মাহমুদ ও হাসান নাছিমুল রাসেল ছাড়াও জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় ও জেলা এবং বিভিন্ন উপজেলার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, রোববার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের কক্ষে এক মামলার সালিশি সভায় বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে আইনজীবীদের হামলায় জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আতাউল্লাহ, জেলা সংগঠক জিহান মাহমুদ ও উপজেলা সংগঠক হাসান নাছিমুল রাসেল আহত হয় বলে অভিযোগ ওঠে। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে হাসাপাতালে নিয়ে ভর্তি করান।
বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০২৪
আরএ