ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

লক্ষ্মীপুরে আসামি ছিনতাই, ৬৭ জনের নামে মামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২৪
লক্ষ্মীপুরে আসামি ছিনতাই, ৬৭ জনের নামে মামলা লক্ষ্মীপুর থানা: ফাইল ফটো

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জে মারামারির মামলায় মো. বেলাল নামে এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তারের পর ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ৬৭ জনের নামে মামলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৪০-৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাদেকুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। তবে অভিযুক্তদের নাম-পরিচয় জানায়নি পুলিশ।

এর আগে বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের শরীফপুর গ্রামে আসামি বেলালকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে।

ঘটনার সঙ্গে সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সাইফুদ্দিন খালেদ, ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য আবুল কাশেমসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী জড়িত বলে স্থানীয়ভাবে জানা গেছে।  

অভিযুক্ত বেলাল ভবানীগঞ্জের চরভূতা গ্রামের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মনির হোসেনের ছেলে ও বিএনপির স্থানীয় কর্মী। জমি সংক্রান্ত বিরোধে মারামারির ঘটনায় সদর মডেল থানায় দায়েরকৃত একটি মামলার প্রধান আসামি তিনি। ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত সুলতান আহমদের ছেলে নুর ইসলাম বাদী হয়ে গত ২৬ নভেম্বর মামলটি করেন করেন।  

মামলা সূত্র জানায়, এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আসামিরা বাদী নুর ইসলামের ছেলে রুবেলের ওপর হামলা করে বেলাল ও তার লোকজন। হামলায় তার মাথা ফেটে মারাত্মক জখম হয়। এতে মাথায় ১৫টির মতো সেলাই দিতে হয়েছে। মামলায় বেলালসহ মোট ৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।  

পুলিশ জানায়, বুধবার রাতে সদর থানা পুলিশের একটি দল মারামারির মামলার আসামি বেলালকে গ্রেপ্তার করতে শরীফপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় অভিযানে যায়। পরে তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসার সময় আসামিপক্ষের লোকজন পুলিশের কাছ থেকে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা গিয়ে ছিনিয়ে নেওয়া আসামি বেলালসহ জড়িতদের ধরতে রাতভর ওই গ্রামে অভিযান চালায়। ঘটনার সাথে জড়িতরা পালিয়ে যায়।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় ৫ জন বাসিন্দা জানায়, ঘটনার সময় আসামি বেলাল একটি দোকানে বসা ছিল। সদর থানার সাদা পোশাকধারী পুলিশ সদস্যরা গিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় দোকানে উপস্থিত থাকা স্থানীয় সাইফুদ্দিন খালেদ ও আবুল কাশেমসহ কয়েকজন সাদা পোশাকধারীদের পরিচয় জানতে চায়। এরমধ্যেই লোকজন জড়ো হতে থাকে। একপর্যায়ে তারা বেলালকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যেতে সাহায্য করে। পরে সেখান থেকে সবাই গিয়ে কাশেমের ঘরে অবস্থান নেয়। রাতে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে বেলালসহ জড়িতদের গ্রেপ্তার অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশ অন্য একজনের ঘর ঘেরাও কাশেমের ঘর থেকে সবাই আত্মগোপনে চলে যায়। তবে পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।  

সদর (পূর্ব) উপজেলা বিএনপির সদস্য সাইফুদ্দিন খালেদ বলেন, বেলালসহ আমরা দোকানে চা পান করতে বসি। ওইসময় সাদা পুলিশধারী লোকজন এসে তাকে আটক করে। পরে তারা নিজেদের পুলিশ পরিচয় দেয়। এরমধ্যে লোকজন জড়ো হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে কৌশলে বেলাল পালিয়ে যায়। এখানে কেউ তাকে ছিনিয়ে নেয়নি। ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ সত্য নয়। ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটলে বেলাল তার লুঙ্গি ফেলে রেখে পালাতো না।

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ বলেন, এক আসামিকে কয়েকজন লোক পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে। এ ঘটনায় এসআই সাদেকুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৪০-৫০ জনের নামে মামলা করেছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২৪
জেএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।