ঢাকা, শনিবার, ৩ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

প্রেস সচিবের অ্যাকাউন্টে কত টাকা, কত সম্পত্তি—জানালেন নিজে

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৫
প্রেস সচিবের অ্যাকাউন্টে কত টাকা, কত সম্পত্তি—জানালেন নিজে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি

নিজের সম্পদের বিবরণী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।

শুক্রবার (১৬ জানুয়ারি) দেওয়া সেই পোস্টে শফিকুল আলম লেখেন, ২০০০ সালের দিকে আমার বাবা ঢাকা শহরের নিম্নমধ্যবিত্ত এলাকা ডেমরার কাছে জুরাইন এবং যাত্রাবাড়ীর মধ্যবর্তী দনিয়া এলাকায় পাঁচতলা একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবন নির্মাণ করেন।

সেই ভবনের একটি ১ হাজার ১৫০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট আমি উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছি। ২০১০ সালে দনিয়া ছেড়ে চলে এলেও এখনো সেই ফ্ল্যাট আমার মালিকানায় আছে।

তিনি আরো লেখেন, ২০১৪ সালে আমি শাহীনবাগে ১ হাজার ১০০ বর্গফুটের একটি তিন বেডরুমের ফ্ল্যাট কিনেছিলাম। ভাই এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন কিছু টাকা দিয়েছিলেন, আর বাকিটা আমার সঞ্চয় থেকে দিয়েছিলাম। আমি জায়গাটি ভালোবাসি। তবে নিরাপত্তার কারণে হয়তো খুব শিগগিরই এই ফ্ল্যাট ছেড়ে যেতে হবে। সম্প্রতি দেখছি, আমাদের এলাকার মসজিদের ভিক্ষুকরাও আমাকে চেনেন। কিছুদিন আগে কয়েকজন তরুণ আমাকে তাদের আড্ডার সামনে দিয়ে হাঁটার সময় ‘গণশত্রু’ বলে ডেকেছিল। এ কারণে আমাকে হয়তো শিগগিরই সরকারি একটি ফ্ল্যাটে চলে যেতে হবে। আমার পরিবার এ নিয়ে গভীরভাবে চিন্তিত।

শ্যালকের কাছ থেকে প্রায় পাঁচ বছর আগে ময়মনসিংহে একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন শফিকুল আলম।

সে কথা জানিয়ে তিনি লেখেন, খুব সস্তায় পেয়েছিলাম সেটি। একই ভবনে আমার স্ত্রী তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে একটি ফ্ল্যাট পেয়েছেন। এই দুটি ফ্ল্যাট আমাদের জন্য মাসিক আয়ের একটি উৎস। এছাড়া গ্রামে আমার ৪০ শতাংশ আবাদি জমি আছে। বহু বছর ধরে একটা ভ্রান্ত ধারণায় ভুগেছি যে, অবসরে গ্রামে ফিরে যাব। শুধু লিখব আর হাঁটব—এটাই ছিল পরিকল্পনা। কিন্তু এখন মনে হয়, গ্রামে আর কখনো ফিরে যাওয়া হবে না। হয়তো আমি মরে গেলে আমার সন্তানরা আমাকে বাবা-মায়ের পাশেই কবর দেবে।

প্রেস সচিব শফিকুল আলমের ফেসবুক থেকে

ব্যাংক অ্যাকাউন্টের হিসাবও দেন প্রেস সচিব। তিনি লেখেন, আমার একটি মাত্র ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ১৪ লাখ টাকা (১১.৪ মিলিয়ন টাকা) সঞ্চিত আছে। এই টাকার অধিকাংশ আমার আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপিতে চাকরির পেনশন এবং গ্র্যাচুইটি।  

দুই দশক চাকরি শেষে গত আগস্ট মাসে এএফপির চাকরি ছাড়েন জানিয়ে শফিকুল আলম লেখেন, কিছু মানুষ আমার কাছ থেকে প্রায় ত্রিশ লাখ টাকা ধার নিয়েছে। আমার ধারণা, চলতি বছরের শেষে আমার সঞ্চয় অপরিবর্তিত থাকবে, নয়তো খরচের কারণে কমে যাবে। আমার একটা গাড়ি আছে আর ঢাকায় চালকের বেতনসহ একটি গাড়ি পরিচালনায় মাসিক খরচ প্রায় ৫০ হাজার টাকা।  

তিনি লেখেন, প্রেস সেক্রেটারির কাজ শেষ হলে ভাগ্য কোথায় নিয়ে যাবে জানি না। কিন্তু আমি নিশ্চিত যে, বছরের পর বছর প্রায় এক ডজন পশ্চিমা গণমাধ্যমে অ্যাসাইনমেন্ট করে, দিনে ১০-১৫ ঘণ্টা কাজ করে আমি যে সঞ্চয় করেছি এতে মধ্যবিত্তের মতোই সাধারণ জীবনযাপন করতে পারব।  

সবশেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব লিখেছেন, ক্ষমতায় থাকলে অনেকেই আপনার উপার্জন নিয়ে মিথ্যা ছড়ায়। আর এটাই আমার পূর্ণাঙ্গ সম্পত্তির প্রকাশ।

উল্লেখ্য, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার তাগিদ দিয়ে আসছে অন্তর্বর্তী সরকার। সর্বশেষ সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের সময়সীমা বাড়িয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি করা হয়েছে। সেই সূত্রেই নিজের সম্পদ ও অ্যাকাউন্টে জমা অর্থের হিসাব জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিলেন  প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৫
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।