ঢাকা: বন্ধুদের সঙ্গে মিশে আসক্ত হন মাদকে। আর মাদকের টাকা জোগাড় করতে নিজ পরিবার থেকেও করতেন চুরি।
তিনি ৪৫ বছর বয়সী আবু সালেহ, যার মরদেহ বুধবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার একটি গাছের উপরের দিকের একটি ডালে ঝুলছিল।
বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে তার মরদেহ শনাক্ত করেন তার ছোট দুই ভাই আবু হায়দার ছোটন ও মোহাম্মদ আলী। সেখানে কথা হয় তাদের সঙ্গে।
তারা জানান, চার ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় আবু সালেহ টেইলার্সে কাজ করতেন। তবে বাজে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় বছর বিশেক আগে জড়ান মাদকে। গাজা, ইয়াবা থেকে শুরু করে প্যাথেডিন পর্যন্ত সেবন করতেন তিনি। এক পর্যায়ে মানসিক ভারসাম্যও হারিয়ে ফেলেন।
আবু সালেহর ভাই মোহাম্মদ আলী জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের সদর উপজেলার নগরকসবা গ্রামে। তার বাবার নাম আব্দুর রব। তবে তারা পরিবার নিয়ে বহুবছর ধরে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ কালীগঞ্জের নয়াবাড়ি এলাকায় থাকেন।
তিনি জানান, আবু সালেহ ছিলেন অবিবাহিত। এলাকায় একটি টেইলার্সে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। সেখান থেকেই কিছু বাজে বন্ধু-বান্ধবের আড্ডায় পড়ে জড়ান মাদকে। প্রথম প্রথম তাকে সবাই বুঝিয়ে মাদক থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করেন।
তবে দিন দিন সালেহর আসক্তি বাড়তে থাকে। তিন বছর আগে টেইলার্সের কাজ ছেড়ে দেন। বাড়ি থেকেও চলে আসেন। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রাস্তাঘাটে থাকা শুরু করেন। মাঝেমধ্যে তিনি বাড়িতে যেতেন। দু-একদিন থেকে মা-বাবা, ভাইদের কাছ থেকে কিছু টাকা-পয়সা চেয়ে নিয়ে আবার বাড়িছাড়া।
সালেহর সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা সম্ভব হতো না। সবশেষ গত পাঁচ দিন আগেও বাড়িতে গিয়েছিলেন। তখন মায়ের কাছ থেকে ওষুধ কেনার কথা বলে এক হাজার টাকা নিয়ে আসেন। এরপর তার সঙ্গে আর কারো যোগাযোগ হয়নি। আজ দুপুরে শাহবাগ থানা পুলিশের মাধ্যমে ভাইয়ের লাশ উদ্ধারের কথা জানতে পারেন মোহাম্মদ আলী।
আরেক ভাই আবু হায়দার ছোটন জানান, মাদকাসক্ত হওয়ার পর সাত-আট বছর আগে সালেহ একবার নিজেদের বাড়িতেই আগুন দেন। পরে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় সেই আগুন নেভানো হয়।
পাঁচ বছর আগেও একবার গাছে উঠে গলায় ফাঁস দেয়ার চেষ্টা করছিলেন। তখন স্থানীয়রা দেখে তাকে গাছ থেকে নিচে নামান। আবু সালেহ মাঝে মধ্যেই উদ্ভট কথাবার্তা বলতেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২৫
এজেডএস/আরএইচ