কুমিল্লা: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বন্ধুর প্রেম ও বিয়ের ঘটনায় বলি হলেন মো. আতিক (১৭) নামে এক স্কুলছাত্র। বন্ধুর প্রেমিকার স্বজনদের হামলায় আহত হন আতিক।
এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নিহত আতিক চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সোনাকাটিয়া আদর্শ গ্রামের আবদুল মান্নান মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় চৌদ্দগ্রাম সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, স্কুলছাত্র আতিকের সহপাঠী মো. সজীবের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল একই এলাকার সৌদি প্রবাসী মো. নেয়ামত উল্যাহ মেয়ে নাজনিন সুলতানা নাদিয়ার। গত বছরের ১৩ অক্টোবর পালিয়ে বিয়ে করে তারা। মেয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি অপহরণের অভিযোগ এনে নাদিয়ার মা নাজমা বেগম চৌদ্দগ্রাম থানায় সজীবসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এর কয়েকদিন পর পুলিশ নাদিয়াকে উদ্ধার করে আদালতের মাধ্যমে তার পরিবারের জিম্মায় দেয়।
এর জেরে সোমবার রাতে নাদিয়ার বাবা নেয়ামত উল্যার নেতৃত্বে ৫-৬ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি সোনাকাটিয়া এলাকায় আতিককে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানেও তার অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে আইসিইউতে সিট না পেয়ে তার স্বজনরা একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার বিকেলে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল করে ও নাদিয়াদের বাড়িঘরে হামলার চেষ্টা চালানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহতের বাবা আবদুল মান্নান মিয়া বলেন, আমার গ্রামের একটি প্রেমের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নাদিয়ার বাবা নেয়ামত উল্যার নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা আমার ছেলেকে অন্যায়ভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, পূর্ব বিরোধের জের ধরে সোমবার রাতে আতিক নামে এক স্কুলছাত্রকে প্রতিপক্ষের লোকজন পিটিয়ে আহত করা হয় বলে জানতে পেরেছি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার বিকালে ঢাকায় মারা গেছে। এই সংবাদে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫
এসএএইচ