ঢাকা, রবিবার, ২ ফাল্গুন ১৪৩১, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

অপরাধ নির্মূলে তরুণদের মধ্যে সাংস্কৃতিক জাগরণ তৈরি করতে হবে: কাদের গণি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৫
অপরাধ নির্মূলে তরুণদের মধ্যে সাংস্কৃতিক জাগরণ তৈরি করতে হবে: কাদের গণি বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী।

ঢাকা: সমাজ থেকে অন্যায়-অপরাধ নির্মূলে তরুণদের মধ্যে সাংস্কৃতিক জাগরণ তৈরি করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মুক্ত বাংলাদেশে ‘স্বাধীন শিল্প সংস্কৃতি চর্চা’ শীর্ষক আলোচনা এবং জুলাই ২০২৪ ছাত্র আন্দোলনের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘দ্য রিমান্ড’র টিজার প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

 

জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে এ সভার আয়োজন করে ‘দ্য রিমান্ড’ চলচ্চিত্রের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান রেডপোস্ট ক্রিয়েশন।

সভায় কাদের গণি চৌধুরী বলেন, এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন একটি সাংস্কৃতিক জাগরণ। সিনেমার মধ্য দিয়ে জনগণকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করা, রক্তপাতের বিপক্ষে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা। এটা সাংস্কৃতিক জাগরণের অংশ। সমাজ থেকে অন্যায়, অপরাধ নির্মূল করতে হলে তরুণদের মধ্যে সাংস্কৃতিক জাগরণ তৈরি করতে হবে। ছাত্ররা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যে জাগরণ তৈরি করেছে, এটাও কিন্তু সাংস্কৃতিক জাগরণের অংশ।

তিনি বলেন, সমাজ থেকে অপসংস্কৃতি দূর করতে হলে আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে আরও জোরদার করতে হবে। অর্থাৎ একটি সাংস্কৃতিক জাগরণ খুব জরুরি। পৃথিবীর সবাই এখন সাংস্কৃতিক জাগরণের প্রতি জোর দিচ্ছে। বিশ্ব অনুভব করছে, নৈরাজ্য ও সাম্প্রদায়িকতা থেকে জাতিকে সুরক্ষিত করতে হলে, ফ্যাসিজমমুক্ত করতে হলে সাংস্কৃতিক জাগরণের বিকল্প নেই। আমি মনে করি, আমাদেরও সেদিকে বেশি মনোযোগ দেওয়া দরকার।

তিনি আরও বলেন, একটি শ্রেণি আমাদের দেশীয় সংস্কৃতিকে দূরে সরিয়ে দিয়ে বিজাতীয় সংস্কৃতিকে সামনে আনতে চায়। এই ব্যাপারে আমাদের সজাগ থাকতে হবে এবং যেকোনো মূল্যে এটা দমন করতে হবে। এদেশের সংস্কৃতি যাদের আকৃষ্ট করে না, যারা বিজাতীয় সংস্কৃতি আমদানি করতে চান, তারা অন্য দেশে চলে যান। তাতে তো কোন বাধা নেই।

‘দ্য রিমান্ড’ চলচ্চিত্র নিয়ে কাদের গণি বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে এই চলচ্চিত্রটি একটি প্রামাণ্যচিত্র। এই চলচ্চিত্রটি বাংলার ঐতিহাসিক অংশ। জুলাই বিপ্লবকে বাংলার ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যাবে না। আমি মনে করি, এই চলচ্চিত্রটি নির্মাণের মধ্য দিয়ে এদেশের জনগণের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত করা হয়েছে। ঘৃণা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ক্ষতির বিরুদ্ধে, রক্তপাতের বিরুদ্ধে। আমি মনে করি, জুলাই বিপ্লবের বীর শহীদদের প্রতি সম্মান জানানোর জন্য এটা একটি অসাধারণ কাজ।

কাদের গণি আরও বলেন, আমি যতটুকু সিনেমাটি দেখেছি, তার ভিত্তিতে বললে, যারা এই সিনেমাটিকে আটকে দিয়েছেন, তারা শহীদদের রক্তের সাথে প্রতারণা করেছেন। যারা এই সিনেমাটি বন্ধ করেছেন, তাদের কাছে জানতে কী কারণে তারা এটি বন্ধ করেছেন, ত্রুটিটা কোথায়? এই ধরনের সিনেমা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য আমাদের সন্তানরা জুলাই বিপ্লবে জীবন দেয়নি। এই সতর্ক করে বলতে চাই, এই ধরনের চলচ্চিত্র বন্ধ করা শহীদদের রক্তের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা। এটা আপনারা (সেন্সর বোর্ড) করবেন না। কোথাও ত্রুটি থাকলে জনসম্মুখে সেটা প্রচার করুন আপনারা।

‘দ্য রিমান্ড’ চলচ্চিত্রের প্রযোজক অ্যাডভোকেট বেলায়েত বেলাল বলেন, ‘দ্য রিমান্ড’ একটি ফ্লিম, একটি ঐতিহাসিক দলিল। ছাত্র-জনতার বীরত্ব ত্যাগের ইতিহাস স্মরণীয় বরণীয় করে রাখতে, জাতীয় দায়িত্ব হিসেবে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হয়েছে। সময়ের অন্যতম চলচিত্র ‘দ্য রিমান্ড’ ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড পরীক্ষণ কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। রাষ্ট্রবিরোধী গল্প, বক্তব্য, সংলাপ, থিম কিছু থাকলে সাত দিনের মধ্যেই তা চিঠি দিয়ে জানানো আইনের বিধান। কিন্তু তারা কোন চিঠিপত্র দেয়নি। আলোচনা বা সংলাপ করেনি। অজ্ঞাত কারণে এখনো সনদপত্র ইস্যু করেননি।

তিনি বলেন, অবিলম্বে চলচ্চিত্রটির সনদপত্র ইস্যু করা হোক, ‘দ্য রিমান্ড’ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড মুক্তি দিন।

অ্যাডভোকেট কে এম জাবিরের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, এনটিভির পরিচালক নুরুদ্দীন আহমেদ, ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল, সাংবাদিক এরফানুল হক নাহিদ, কামরুল হাসান দর্পণ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সাদিক আল আরমান, অভিনেতা মারুফ আকিব ও আবির পারভেজ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫,২০২৫
এসসি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।