ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ‘মা আমাকে অনেক আদর করত, কোথাও যেতে দিত না। তাই এ জেদ থেকে মেরে ফেলি।
এভাবেই আদালতে মাকে মেরে ফেলার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন সিয়াম মোল্লা (১৯) নামে এক যুবক।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসমা জাহান নিপার আদালতে সিয়াম জবানবন্দি দেন।
এর আগে শুক্রবার ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের আনন্দপুর গ্রামে নিজেদের ঘরে সিয়ামের মা নাসিমা আক্তারের রক্তাক্ত মরদেহ পাওয়া যায়।
জবানবন্দিতে হত্যার বর্ণনা দেন সিয়াম। তিনি বলেন, ‘ঘরে আমি আর মা ছিলাম। মা ঘুমিয়ে ছিল। এসময় কাঠ দিয়ে আঘাত করে দেখি মা মরেনি। পরে বটি-দা’ দিয়ে কোপ দিই। ’
সিয়াম আরও জানান, ঘটনার পর তিনি মায়ের মরদেহের পাশে বসে বিলাপ করতে থাকেন। জমি নিয়ে বিরোধের জেরে স্বজনরা হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ করতে থাকেন তিনি।
একপর্যায়ে তার সাত বছরের ভাগিনা ফারুক পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে তার মামাই (সিয়াম) নানিকে (নাসিমা) হত্যা করেছেন।
শুক্রবার ভোরে নিজেদের শোবার ঘরের বিছানায় নাসিমা আক্তারের রক্তাক্ত মরদেহ পড়েছিল। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
প্রাথমিক তদন্ত করে পুলিশ সিয়ামকে আটক করার পর তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন।
খুন হওয়া নাসিমা আনন্দপুর গ্রামের মিজান মোল্লার স্ত্রী। এ ঘটনায় মিজান মোল্লা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেছেন।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মুসা মিয়া জানান, ওই নারীর স্বামী শুক্রবার ভোরে ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদে যান। ফিরে এসে দেখেন বিছানায় নাসিমা আক্তারের রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে আছে। সিয়াম মানসিক প্রতিবন্ধী। তিনি প্রায়ই বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতেন। তাকে বার বার ফিরিয়ে আনায় ক্ষোভ ছিল তার। এ ক্ষোভ থেকেই মাকে হত্যা করেন বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ছমিউদ্দিন জানান, সিয়াম হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৫
এসআই