ঢাকা, শুক্রবার, ৮ ফাল্গুন ১৪৩১, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

জমি পেতে বাবাকে গুলি, পুলিশের কাছে ধরা পড়লেন ঋণগ্রস্ত ছেলে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৫
জমি পেতে বাবাকে গুলি, পুলিশের কাছে ধরা পড়লেন ঋণগ্রস্ত ছেলে

নাটোর: ছেলের ব্যক্তিগত ঋণের বোঝা প্রায় ৭০ লাখ টাকা। সেই টাকা পরিশোধ করতে বাবা ওসমান গনি বাবুকে (৫২) হত্যার পর তার জমি বিক্রি করার পরিকল্পনা করেন আসাদুজ্জামান বল্টু নামে এক যুবক।

 

পাশাপাশি বাবার সব সম্পদ একাই ভোগ-দখল করার পরিকল্পনা থেকে ঢাকা থেকে কিনে আনেন গুলিসহ চাইনিজ পিস্তল।

আর সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী নিজেই নিজের বাবাকে ফজরের নামাজে যাওয়ার সময় অন্ধকারে গুলি করেন। কিন্তু অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান তার বাবা ওসমান গনি বাবু। তিনি গুরুতর অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় বল্টুর বোনের করা মামলা করেছেন। এ মামলায় গ্রেপ্তারের পর পুলিশকে এমন তথ্যই দিয়েছেন আসাদুজ্জামান বল্টু।  

পরে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

গত ০১ ফেব্রুয়ারি নাটোরের সিংড়া উপজেলার চৌগ্রাম পারুহারপাড়ায় এ ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৪০০ মিটার দূরে একটি পরিত্যক্ত টিনের ঘর থেকে একটি চাইনিজ পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও এক রাউন্ড তাজা গুলি উদ্ধার করে সিংড়া সেনা ক্যাম্পের (১১ এসপি রেজিমেন্ট) একটি টহলদল। এ ঘটনায় ওসমান গনি বাবুর মেয়ে বেবি খাতুন বাদী হয়ে ওই দিনই সিংড়া থানায়  মামলা করেন।

ওই মামলার পর ঘটনার রহস্য উদঘাটনে নামে পুলিশ। অবশেষে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) গুলিবিদ্ধ ওসমান গনির ছেলে আসাদুজ্জামান বল্টুকে পুলিশ আটক করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর আসল রহস্য জানা যায়।  

সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসমাউল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বাংলানিউজকে জানান, মো. ওসমান গনি বাবু পেশায় একজন ধান-চাল ব্যবসায়ী। তিনি গত ১ ফেব্রুয়ারি ভোর ৬টার দিকে ফজরের নামাজ পড়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। মসজিদের সিঁড়িতে উঠতেই তার কোমরের পেছনে বাম পাশে গুলি লাগে।  

ওসি বলেন, মো. ওসমান গনি বাবুর এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। স্ত্রী অনেক আগে তাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার পর আবার বিয়ে করে সংসার করছেন। কিন্তু এ পক্ষের কোনো সন্তান হয়নি। ছেলে-মেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়ে তার ভালোই দিন কাটছিল। তার সহায়-সম্পদও রয়েছে বেশ ভালো। তিনি স্থানীয় বাজারে ধান-চালের ব্যবসা করেন। ছেলে আসাদুজ্জামান বল্টুও তার ব্যবসা দেখাশুনা করেন।

তবে সারাক্ষণ জুয়ায় আর মাদকে আসক্ত হওয়ায় প্রায় ৭০ লাখ টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। সেই ঋণের দায় থেকে বাঁচতে বাবাকেই হত্যার পর সম্পত্তি বিক্রি করতে আর সব সম্পত্তি একাই ভোগ দখলের পরিকল্পনা করেছিলেন বল্টু।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৫
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।