ঢাকা, রবিবার, ৯ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

চলন্ত বাসে ডাকাতির সময় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি: পুলিশ সুপার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৫
চলন্ত বাসে ডাকাতির সময় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি: পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলনে টাঙ্গাইলের জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান। ছবি: বাংলানিউজ

টাঙ্গাইল: ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে রাজশাহীগামী বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি করা হলেও কোনো ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছেন টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান।  

তিনি বলেন, ডাকাতির সময়  বাসে থাকা দুই/তিনজন নারী যাত্রীর গলা থেকে চেইন এবং কান থেকে দুল নেওয়ার সময় তাদের শ্লীলতাহানি করে ডাকাতদলের সদস্যরা।

তবে তাদের (ভিকটিম) সঙ্গে কোনো ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান তার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং এ দাবি করেন।

এদিকে ডাকাতির ঘটনায় মামলা হওয়ার ১৪ ঘণ্টার মধ্যেই এ ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে আন্তঃজেলা ডাকাতদলের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাতে টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ঢাকার সাভার থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তার তিন ডাকাত হচ্ছেন - মানিকগঞ্জের দৌলতপুর সদর উপজেলার লাউতারা গ্রামের মো. বদর উদ্দিন শেখের ছেলে মো. শহিদুল ইসলাম ওরফে মুহিত (৩০), শরিয়তপুরের জাজিরা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের মো. ইসমাইল মোল্লার ছেলে মো. সবুজ (৩০) এবং ঢাকার সাভার উপজেলার টানগেন্ডা গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে মো. শরীফুজ্জামান (২৮)।

এ সময় তাদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত হওয়া ৩টি মোবাইল ফোন, ১টি ছুরি ও ২৯ হাজার ৩৭০ টাকা উদ্ধার করা হয়।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, চলন্ত বাসে ডাকাতির ঘটনায় মামলা হওয়ার ১৪ ঘণ্টার মধ্যেই এ ঘটনায় জড়িত তিন আন্তঃজেলা ডাকাতদলের সদস্যকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। বাকিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তার তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে হাজির করা হয়েছে। এ ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার কারণে মির্জাপুর থানার এএসআই আতিকুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এর আগে, বাসে ডাকাতির ঘটনায় ওই বাসের যাত্রী ওমর আলী বাদী হয়ে শুক্রবার ভোরে মির্জাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে ইউনিক রোড রয়েলস্ পরিবহনের ঢাকা কোচ (ময়মনসিংহ-ব-১১-০০৬১) বাসটি ঢাকার গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে রাজশাহীর নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হয়। বাসটি গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানাধীন চন্দ্রা বাইপাসে পৌঁছালে চা-বিরতির জন্য থামে। সেখান থেকে আরও তিন থেকে চারজন নতুন যাত্রী নিয়ে রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা করে বাসটি।  

রাত দেড়টার দিকে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানাধীন হাইটেক সিটি পার্ক সংলগ্ন খাড়াজোড়া ফ্লাইওভার ব্রিজ অতিক্রম করার ৫ থেকে ৬ মিনিট পর হঠাৎ বাসে ৮ থেকে ৯ জন যাত্রীবেশে থাকা ডাকাত একসঙ্গে দাঁড়িয়ে যায় এবং ধারালো চাকু ও চাপাতি দিয়ে প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে সকলকে চুপ থাকতে বলেন। এ সময় তাদের মধ্যে তিনজন অজ্ঞাতনামা ডাকাত গাড়িচালকের গলায় ধারালো চাকু ধরে টানাহিঁচড়া করে কিলঘুষি মেরে তাকে উঠিয়ে নিয়ে পেছনে উল্টা করে রাখে। ডাকাতদের মধ্যে থেকে একজন ডাকাত চালকের আসনে বসে বাসটি নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং বাসটি চালিয়ে টাঙ্গাইলের দিকে রওনা হয়। পরে মির্জাপুর উপজেলার সোহাগপাড়া সাকিনস্থ ফুটওভার ব্রিজের প্রায় ১০০ গজ পশ্চিম পার্শ্বে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে পৌঁছালে ডাকাতদলের ৬ থেকে ৭ জন সদস্য বাসে থাকা অন্যান্য যাত্রীদেরকে ধারালো চাকু ও চাপাতি দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।  

এসময় তারা যাত্রীদেরকে কাছে থাকা টাকা, মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার ও রূপাসহ সব মালামাল ছিনিয়ে নেন। পরে ডাকাতদলের সদস্যরা বাসটিকে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা গাজীপুরের কালিয়াকৈর, কোনাবাড়ীসহ গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ঘোড়ায় এবং এই সময়ের মধ্যে যাত্রীদেরকে ধারালো চাকু ও চাপাতি দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এসময় দুইজন নারী যাত্রীকে শ্লীলতাহানী করা হয়।

এজহারে আরও বলা হয়েছে, সব যাত্রীদের টাকাসহ অন্যান্য মালামাল লুট করে রাত ৪টার দিকে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন বাড়ইপাড়া এলাকার নন্দন পার্কের সামনে বাসটি থামিয়ে মালামাল ও টাকা পয়সাসহ নেমে দ্রুত চলে যায়। পরবর্তীতে চালক বাস নিয়ে চন্দ্রা মোড়ে গেলে যাত্রীরা জাতীয় জরুরিসেবা ৯৯৯-এ ফোন করে ঘটনার বিষয়ে পুলিশকে জানায়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৫
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।