ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ চৈত্র ১৪৩১, ১৮ মার্চ ২০২৫, ১৭ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

ঈদযাত্রায় রোডক্র্যাশ কমাতে তরুণদের ৯ সুপারিশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২৫
ঈদযাত্রায় রোডক্র্যাশ কমাতে তরুণদের ৯ সুপারিশ মতবিনিময় সভায় কথা বলছেন ইয়ুথ ফোরামের সমন্বয়কারী মারজানা মুনতাহা। 

ঢাকা: ‘ঈদের মতো বড় উৎসবের ছুটিতে দেশে রোডক্র্যাশে (সড়ক দুর্ঘটনা) হতাহতের ঘটনা বেড়ে যায়। কিন্তু কেন থামানো যাচ্ছে না রোডক্র্যাশ? কারণ রোডক্র্যাশ প্রতিরোধে এবং সড়কে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজন একটি উপযুক্ত আইন, যা বাংলাদেশে নেই।

তাই একটি সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন এবং এর যথাযথ প্রয়োগ অতীব জরুরি। ’

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর শ্যামলীতে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরে সভাকক্ষে আহ্ছানিয়া মিশন ইয়ুথ ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিংয়ের আয়োজনে ঈদযাত্রায় রোডক্র্যাশ কমাতে তরুণদের সুপারিশ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন ইয়ুথ ফোরামের সমন্বয়কারী মারজানা মুনতাহা।  

এ সময় তিনি ঈদযাত্রাসহ সব সময়ে রোডক্র্যাশ কমাতে তরুণদের নয় সুপারিশ তুলে ধরেন। সেগুলো: দেখা যায় বেশিরভাগ রোডক্র্যাশ সংঘটিত হয় গতির কারণে। তাই দেশের সড়ক ও যানবাহনের পরিস্থিতির কথা ভেবে নিরাপদ গতি নির্ধারণ করা উচিত এবং এ সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা গাইডলাইন অতিসত্বর প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি ঈদে মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা মেনে চলতে সবাইকে বাধ্য করতে হবে।

মোটরসাইকেলচালক ও আরোহী উভয়েরই ঈদে চলাচলে মানসম্মত হেলমেট ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে এবং অতিদ্রুত এ সংক্রান্ত এনফোর্সমেন্ট গাইডলাইন প্রণয়ন করতে হবে।  

সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে হবে।  

চালকদের কর্মঘণ্টা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। যাতে ঈদযাত্রায় চালকরা পর্যাপ্ত বিশ্রাম পায়। কারণ ক্লান্ত চালক যেমন নিজের জীবনের ঝুঁকি বাড়ায়, তেমনি যাত্রীদের জন্যও বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।  

ঈদযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মহাসড়কে নছিমন, করিমন, টেম্পোসহ সব ধরনের ব্যাটারিচালিত যানবাহন ও ভটভটি চলাচল বন্ধ করতে হবে।  

মদ বা নেশাদ্রব্য সেবন করে যাতে গাড়ি না চালায় সেদিকে কঠোর নজরদারি রাখতে হবে এবং এ সংক্রান্ত বিধি-বিধান বাস্তবায়ন করতে হবে।  

ঈদযাত্রায় যানবাহনে চালকসহ সব যাত্রীর সিটবেল্ট ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে এবং অতিদ্রুত এ সংক্রান্ত গাইডলাইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

পরিবহনের পাশাপাশি পথচারী পারাপার ও তাদের নিরাপদে চলাচলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। যেমন ফুটপাত হকারমুক্ত করতে হবে। ফুটওভার পথচারীবান্ধব করতে হবে। এবং ফুটপাত ও ফুটওভার ব্যবহারে পথচারীদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এছাড়াও পারাপারের সময় মোবাইলফোন ব্যবহার না করা, জেব্রাক্রসিং দিয়ে রাস্তা পার হওয়া ইত্যাদি বিষয়ে পথচারীদের সচেতন করতে হবে এবং সর্বোপরি, বিশ্বব্যাপী সমাদৃত সেফ সিস্টেম অ্যাপ্রোচের আদলে সমন্বিত সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তথ্যমতে গত ঈদুল ফিতরের আগে ও পরের সময়ের রোডক্র্যাশে ১৭ দিনে সারাদেশে ২৮৬ সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২০ জন নিহত এবং ৪৬২ জন আহত হয়। তাই ঈদযাত্রাসহ দেশে রোডক্র্যাশের সংখ্যা কমিয়ে আনা যায়, সেই লক্ষ্যে ইয়ুথ ফোরামের পক্ষ থেকে মারজানা মুনতাহা, এ.এফ.এম সাদমান সাকিব, বাংলাদেশ মেডিকেল স্টুডেন্ট সোসাইটির জাকিয়া মাইশা ও নিশাত তারান্নুম, বাংলাদেশ ডিবেট ফেডারেশনের ইশতিয়াক ইমন, মিশন গ্রিন বাংলাদেশের আহ্সান রনিসহ বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক তরুণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থেকে সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, ১৯ ফেব্রুয়ারি রোড সেফটি বিষয়ে মরক্কোর মারাকাসে অনুষ্ঠিত চতুর্থ গ্লোবাল মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সে ২০২৭ সালের মধ্যে সেফ সিস্টেম অ্যাপ্রোচের আদলে বাংলাদেশে একটি সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের প্রতিশ্রুতি দেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত এবং শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২৫
এমএমআই/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।