মাগুরা: মাগুরায় নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যাওয়া শিশু আছিয়ার পরিবারে নেই কোনো ঈদ আনন্দ। কদিন আগেও আদরের সন্তান ঘরে- আঙিনায় ছুটোছুটি করত, খেলতো আপন মনে।
বেঁচে থাকলে ঈদের নতুন পোশাকের আর সেমাই-পায়েসের বায়না ধরত আছিয়া। হাতে দিত মেহেদী। বোন ও সাথীদের সঙ্গে খেলতো। কিন্তু আছিয়াকে বাঁচতে দিল না পিশাচ ধর্ষক।
সবাই যখন ঈদ আনন্দে মেতে আছে তখন শ্রীপুরের জারিয়া গ্রামে আছিয়ার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। মেয়ের কবরের দিকে তাকিয়ে শুধুই কাঁদছেন আছিয়ার মা আয়েশা আক্তার।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে আছিয়ার মা বললেন, যে পরিবারের একটা বাচ্চা এভাবে চলে যায়, সেই পরিবারের আর কিসের ঈদ! সেই পরিবারের মা-বাবা কি কোনোদিন ঈদ করতে পারে! আমি মা হয়ে কীভাবে ঈদ আনন্দে মাতব? ঈদের দিন আছিয়ার প্রিয় খাবার ছিল খিচুড়ি। এখন খিচুড়ি খাওয়ার মানুষ কই আমার।
প্রতিবেশিরা জানান, আছিয়ার পরিবার গরীব। মেয়ের শোকে ঈদ আনন্দ মাটি পরিবারটির। আছিয়ার মায়ের কান্না থামছেই না। মেয়েটি মারা যাওয়ার পর শোকে তার বাবাও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়েছে তাকে। প্রতিবেশিরাই তার খোঁজখবর রাখছেন।
বড়ো বোন হামিদা বলেন, চাঁদরাতে আছিয়ার দুই হাত মেহেদি রঙে রাঙিয়ে দিতাম। আছিয়া নেই। কার হাতে মেহেদী দেব! আছিয়ার জন্য মন খারাপ। বিগত ঈদে আছিয়ার সঙ্গে অনেক মজা করেছি। আমরা দুই বোন একসাথে ঘুরতে যেতাম। এখন কাকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরব!
প্রসঙ্গত, বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসে শহরের নিজনান্দুয়ালী এলাকায় ৫ মার্চ বুধবার রাতে ৮ বছরের ওই শিশু নির্যাতনের শিকার হয়। ঘটনার পর তাকে প্রথমে মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে আনা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ফদিরপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ১৩ মার্চ সে মারা যায়। এ ঘটনায় ধর্ষক হিটু শেখকে প্রধান করে চারজনের নামে মামলা করেছেন শিশুটির মা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৫
এসএএইচ