ঢাকা, রবিবার, ৩০ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নড়াইলে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১, গ্রেপ্তার ২০

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২৫
নড়াইলে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১, গ্রেপ্তার ২০

নড়াইল: নড়াইলের কালিয়ায় আধিপত্য বিস্তারের জেরে দুপক্ষের সংঘর্ষে ফরিদ মোল্লা (৫৭) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।

হত্যা পরবর্তীতে প্রতিপক্ষের কমপক্ষে ২০টি বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

ওই রাতেই পুলিশ ও  সেনাবাহিনী যৌথ অভিযানে সংঘর্ষের সঙ্গে জড়িত উভয় পক্ষের ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।  

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

 

গ্রেপ্তাররা হলেন - মো. আমিরুল ইসলাম (২০), আতিকুর রহমান (১৯), হাচিবুর রহমান (৪৫), মো. মোরসালিন (১৯), হাসেম মোল্যা (৩৪), মনি মিয়া (৪২), মুজাহিদুল (২০), সিরাজ মোল্যা (৫০), দিকু শেখ (২৫), আবু জাফর মোল্যা (৬৫), শাহাদাত হোসেন (৫৬), মুন্নু শেখ (৫২), শাহাজান (৫০), ইউসুফ (২০), নয়ন মোল্যা (২২), আব্দুল মান্নান (৪৫), জমির মল্লিক (৪৮), দিদার মোল্যা (২৫), মনিরুল ইসলাম (১৯) এবং আমিরন হোসাইন(২১)। তারা সবাই ওই এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাঞ্চনপুর গ্রামের মিলন মোল্যা ও আফতাব মোল্যা পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের জেরে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এরই মধ্যে দুপক্ষের বিরোধে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে মিলন মোল্যা পক্ষের সানোয়ার নামের একজন নড়াইলে আদালতে মামলার হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে একা পেয়ে আফতাব মোল্যা পক্ষের লোকেরা মারধর করে। এর জেরে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মিলন মোল্যা পক্ষের লোকেরা আফতাব মোল্যার বাড়িতে হামলা করে। খবর পেয়ে উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হন। ফরিদ মোল্লাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতাল নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ফরিদ নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে আফতাব পক্ষের সোহরাব মোল্যা, পারভেজ শেখ, নাঈম শেখ, সোবহান শেখ, এনায়েত কাজী, আজিজুর মোল্যা, ফায়েক মোল্যা, নেসার মোল্যা, শিমুল শেখ, শামীম শেখ, ইকবাল গাজীসহ আরও অন্তত ২০ জন রাতভর প্রতিপক্ষের লোকজনের বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর এবং লুটপাট করে আগুন ধরিয়ে দেয়। একই সঙ্গে তারা নারী ও শিশুদের মারধর করে ভয়াবহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে এলাকায় একটা ভীতির রাজত্ব তৈরি করে রেখেছে।

এছাড়া বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক পিকুল, কাক্কা মিয়া, সাহেব মোল্যা, বুলু ফকির, খালিদ শেখ, রঙ্গু শেখ, শামরুল মল্লিক, আকার মল্লিক, মোস্তাক মোল্যা, শহিদ শেখসহ আরও অনেকের বাড়িতেও লুটপাট করে আগুন দেওয়া হয়।

এদিকে আহত বশির মুন্সির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য খুমেক হাসপাতাল থেকে শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। রাতে বিশৃঙ্খলার অভিযোগে অভিযানে চালিয়ে ২০ জনকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২৫
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।