বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদ জানিয়েছেন, ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাকে দায়িত্ব না চালিয়ে যেতে ‘ইঙ্গিত’ দেওয়া হয়েছে। তবে এই পরোক্ষ বার্তার পরও তিনি নিজের অবস্থানে অনড়।
“ক্রীড়া উপদেষ্টা আমাকে পদত্যাগ করতে বলেননি। তিনি শুধু বলেছেন যে তাঁরা আমাকে আর চান না। কিন্তু আমি নির্বাচিত সভাপতি। তাই পদত্যাগ করছি না,” —ইএসপিএনক্রিকইনফো'কে বলেন ফারুক আহমেদ।
বিতর্কের মধ্য দিয়ে শুরু, সমালোচনায় নেতৃত্ব
আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায়ের পর গত ২১ আগস্ট বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব নেন সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদ। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে বোর্ডে প্রবেশ করে পরে পরিচালকদের ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি।
তবে শুরু থেকেই তার নেতৃত্ব ছিল আলোচিত ও সমালোচিত। দায়িত্ব গ্রহণের দিনেই পাকিস্তান সফরে থাকা দলের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে অপসারণের হুমকি দিয়ে আলোচনায় আসেন। পরে সেই কোচকে ‘আচরণজনিত কারণে’ বরখাস্ত করা হয় এবং ফারুক ঘোষণা দেন যে ফিল সিমন্স হচ্ছেন নতুন কোচ। তবে প্রক্রিয়াটি ছিল অগোছালো এবং ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয়।
বিপিএল ও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তার ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। ক্রীড়া উপদেষ্টার দপ্তরের এক সচিবের সঙ্গে দ্বন্দ্ব এবং বোর্ড পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিমের সঙ্গে প্রকাশ্য মতানৈক্যও তাকে নিয়ে বিতর্ক বাড়ায়।
নতুন সভাপতি হিসেবে আলোচনায় আমিনুল ইসলাম
এই জটিল পরিস্থিতিতে বিসিবির পরবর্তী সভাপতির সম্ভাব্য নাম হিসেবে আলোচনায় এসেছেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। দেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান ও ১৯৯৯ বিশ্বকাপের অধিনায়ক আমিনুল বর্তমানে আইসিসির উন্নয়ন ব্যবস্থাপক হিসেবে মেলবোর্নে কর্মরত।
তিনি নিজেই জানিয়েছেন, “কয়েক সপ্তাহ আগে ক্রীড়া উপদেষ্টার দপ্তর থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তারা বিসিবিতে একটি দায়িত্ব পালনের জন্য আমাকে বাংলাদেশে আসার অনুরোধ করেন। আমি সম্মত হই। ”
“একজন সৈনিক যখন দেশের ডাক পায়, তখন নিজের স্বার্থ বা বেতন নিয়ে ভাবে না। আমার অবস্থানও তাই—দেশের প্রয়োজনে আমি প্রস্তুত,” —বলেন আমিনুল।
আইসিসিও কিছু সময়ের জন্য তাকে বিসিবিতে পাঠাতে রাজি হয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, দায়িত্ব শেষ করে আমিনুল চাইলে আবার আইসিসিতে ফিরতে পারবেন।
শনিবারই সিদ্ধান্ত?
বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, আগামী শনিবার পরিচালনা পর্ষদের এক বৈঠকে আমিনুল ইসলাম উপস্থিত থাকলে বোর্ডের সিদ্ধান্ত পাল্টে যেতে পারে। ওই বৈঠকে ফারুক আহমেদের পদ ছাড়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে পরিচালকরাই ভোট দিয়ে নতুন সভাপতিকে বেছে নেবেন।
ধারণা করা হচ্ছে, বিসিবির পরবর্তী নির্বাচনের (সম্ভাব্য অক্টোবর) আগ পর্যন্ত আমিনুল ইসলামকে অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি হিসেবে দেখতে চায় ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।
এমএইচএম