ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার ঘটনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ব্যাখ্যা ‘অস্পষ্ট’ ও ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে দাবি করেছে ছাত্রদল। তারা সাম্য হত্যার প্রকৃত কারণ জাতির সামনে উন্মোচনের দাবি জানিয়েছেন।
শনিবার (৩১ মে) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস এসব কথা বলেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, অস্পষ্ট ও ব্যাখ্যাতীত বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে জনগণকে সাম্য হত্যার বিষয়ে বিভ্রান্তির বেড়াজালে আবদ্ধ করে রেখেছে পুলিশ।
এদিকে সাম্য হত্যা ঘটনায় গত ২৭ মে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানান, ১৩ মে রাতে বন্ধুদের সঙ্গে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফুডকোর্টে খেতে গিয়েছিলেন শাহরিয়ার আলম সাম্য। সে সময় উদ্যানের চিহ্নিত মাদককারবারিদের হাতে ছিল আত্মরক্ষার্থে ব্যবহার করা ট্রেজার গান বা ইলেকট্রিক গাড়ি। সেটি দেখতে চাওয়ায় সাম্যর সঙ্গে মাদককারবারিদের এক গ্রুপের বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। এ সময় সাম্যকে সুইচগিয়ার দিয়ে তার রানে আঘাত করেন রাব্বি নামের এক মাদককারবারি।
ডিএমপি কমিশনারের এই ব্যাখ্যাকে অস্পষ্ট বলছেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন। তিনি বলেন, সাম্যকে যেখানে আঘাত করা হয়েছে, পেশাদার খুনি ছাড়া কেউ এটা পারবে না। কারা এই পেশাদার খুনি আনলো, তা স্পষ্ট করা হয়নি। সাম্য হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত ঘটনা জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়সারা আচরণ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্রদল সভাপতি গণেশচন্দ্র রায় সাহস।
তিনি বলেন, সাম্য নিহত হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কাছে নিজের আবেগ প্রকাশ করলে তিনি যেরূপ বালখিল্য ও অপেশাদার আচরণ করেছেন- তা অনলাইনে ও অফলাইনে আলোচিত-সমালোচিত হয়েছে। পরে উপাচার্য-প্রক্টরের ইমেজ সংকট দেখা দিলে সাম্য ও পরিবারকে নিয়ে একদল নানাবিধ গুজব ছড়ায়।
সাহস আরও বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী সাম্য হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং ডাকসু নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়ে প্রশাসনের ব্যর্থতাকে আড়াল করার চেষ্টা করেছে। অথচ ছাত্রদল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ডাকসু ও হল সংসদের গঠনতন্ত্র সংস্কার ও ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের মতো নিরাপদ ও সহনশীল পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছে।
তিনি বলেন, সংস্কার ও নির্বাচনের ক্ষেত্রে ছাত্রদল যেসব প্রস্তাবনা রেখেছে, সেসব বিষয়ে মৌলিকভাবে অন্যান্য অংশীদারের মতামতও অভিন্ন। অথচ এই অপরিণামদর্শী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব বিষয়ে সকল অংশীদারের মতামতকে অগ্রাহ্য করে বিভিন্ন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, সহ-সভাপতি আনিসুর রহমান অনিক, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন শাওন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এফএইচ/এসএএইচ