ঢাকা: রোদ-বৃষ্টি ও গরম উপেক্ষা করে বরিশাল থেকে পরিবারসহ পুরান ঢাকার ইসলামপুরে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত আহসান মঞ্জিলে ঘুরতে এসেছেন মিঠুন নামে এক ব্যক্তি। গাড়ি থেকে নেমেই তার ‘চক্ষু-চড়কগাছ’! কারণ, আজ আহসান মঞ্জিল বন্ধ! ক্ষোভে চিৎকার-চেঁচামেচি করতে থাকেন তিনি।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের ছুটিতে বিভিন্ন স্থান থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে আহসান মঞ্জিলে আসবে। আর এসে যদি দেখে সেটা বন্ধ, তখন কেমন লাগে? কর্তৃপক্ষের কী এতটুকু বিবেক নেই যে, ঈদের ছুটির মধ্যে মানুষ এখানে ঘুরতে আসে? আর যদি আহসান মঞ্জিল বন্ধ রাখবে তাহলে মিডিয়ায় জানিয়ে দেওয়া হলো না কেন?
শত শত দর্শনার্থী বন্ধ আহসান মঞ্জিলের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে বুধবার (১১ জুন) ওই ব্যক্তির মতো এভাবে ক্ষোভ ঝাড়ছিলেন।
ঈদের পঞ্চম দিন আজ বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাজধানীসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শত শত দর্শনার্থী মুঘল আমলের প্রাচীন স্থাপত্য আর ঐতিহাসিক গুরুত্বে ভরপুর ঢাকার নবাব প্রাসাদ আহসান মঞ্জিলে ঘুরতে আসছে। কিন্তু এসেই তারা যেন বিপাকে। কারণ গেটের ভেতরে কাগজে লেখা রয়েছে ‘পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিতে ৫ থেকে ১২ জুন আহসান মঞ্জিল বন্ধ থাকবে। ’
বন্ধের ওই নোটিশ টানানো দেখে আগত দর্শনার্থীদের মনে ক্ষোভের জন্ম নেয়।
তারা জানান, সরকারিভাবে যদি এসব স্থাপনা বন্ধ থাকবে তাহলে ঈদের আগে থেকে টিভি-পত্রিকায় ও অনলাইনে জানিয়ে দিলো না কেন? তাহলে তো দর্শনার্থীদের এমন বিপাকে পড়তে হতো না।
আহসান মঞ্জিলের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সুফিয়া বেগম বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের ছুটিতে রাস্তা ফাঁকা থাকায় সাভার নবীনগর থেকে শিশুসন্তানদের নিয়ে এখানে এসেছিলাম ঢাকার নবাবী আমলের বিভিন্ন ঐতিহাসিক নিদর্শন ফার্নিচার, পোশাক, তৈজসপত্র, চিত্রকর্ম ও স্থাপত্যসামগ্রী দেখাতে। যাতে করে তারা বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালির কারণে সময় ও টাকা নষ্ট হলো।
কলেজছাত্রী জয়া বলেন, অনেক দিনের শখ ছিল আহসান মঞ্জিল দেখার। আজ বাবা ও মায়ের সঙ্গে এখানে ঘুরতে এসেছি। কিন্তু দেখি আজ বন্ধ। তারা আগে থেকে না জানিয়ে শুধু একটা কাগজে লিখে বন্ধ জানিয়ে দিয়ে তাদের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। আমি মনে করি এটা দায়িত্বরতদের গাফিলতি আর ব্যর্থতা।
কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার (১৩ জুন) থেকে যথাযথ নিয়মনুযায়ী আহসান মঞ্জিল খোলা থাকবে।
ঢাকার নবাবদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও রাজকীয় জীবনযাপন সম্পর্কে জানতে যে কেউ ঘুরে যেতে পারেন এই জাদুঘরে। রোববার ব্যতিত সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টিকিট বিক্রি করা হয়। আর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভেতরে অবস্থান করতে পারেন দর্শনার্থীরা।
এএটি