ঢাকা, সোমবার, ২ আষাঢ় ১৪৩২, ১৬ জুন ২০২৫, ১৯ জিলহজ ১৪৪৬

জাতীয়

আলোচনা সভায় বক্তারা

নেতৃত্ব বাছাইয়ে নারীদের প্রত্যক্ষ ভোটে যেতে হবে

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:৫০, জুন ১৫, ২০২৫
নেতৃত্ব বাছাইয়ে নারীদের প্রত্যক্ষ ভোটে যেতে হবে

জাতীয় সংসদের প্রতিনিধিত্বমূলক নেতৃত্ব বাছাইয়ে নারীদের সরাসরি ভোটের দিকেই যেতে হবে বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা। তবে এখনই সে ব্যবস্থায় যাওয়ার মতো পরিস্থিতি বাংলাদেশে রয়েছে কি না, তা নিয়ে তারা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

রোববার (১৫ জুন) বিকেলে ‘নারীর ক্ষমতায়নে সংসদে সরাসরি ভোটে নারী প্রতিনিধিত্ব নির্বাচন: প্রয়োজনীয়তা, চ্যালেঞ্জ ও সমাধান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তারা এসব মতামত তুলে ধরেন।

সভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যৈষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারা বলেন, আমরা মোট সংসদে ২৫ শতাংশ নারী রাখার প্রস্তাব করেছি। তারা সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন। কারণ আমাদের অধিকাংশ ক্ষেত্রে যোগ্যতার ভিত্তিতে মনোয়ন দেওয়া হয় না। ফলে সংরক্ষিত হলে আমরা যেমন প্রতিনিধি চাই, তেমন প্রতিনিধি পাই না। জনগণ সরাসরি নির্বাচিত করার অধিকার থেকে বঞ্চিত হন। ফলে যিনি মনোনয়ন পান, তিনি জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা অনুভব করেন না।

তাসনিম জারা আরও বলেন, সরাসরি নির্বাচিত হয়ে এলে তিনি জনগণের সেবা করতে পারবেন। তার নিজস্ব নির্বাচনী এলাকা থাকবে এবং তিনি তাদের প্রতি দায়বদ্ধ থাকবেন। একইসাথে সরাসরি নির্বাচন হলে তৃণমূল থেকে নারীরা উঠে আসবেন।

বিএনপির সাংগঠিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদও সরাসরি নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন। তবে তা এখনই কতটুকু বাস্তবায়ন করা সম্ভব, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি।

শামা ওবায়েদ বলেন, নারীদের সংখ্যা বাড়াতে হবে। আমরা ১০০ আসনে রাজি হয়েছি। তবে এটি বাস্তবায়নে প্রথমে রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্য থাকবে। এটা অনেক কঠিন ব্যাপার। কারণ কেউ কাউকে জায়গা দিতে চায় না।

তিনি বলেন, আমরা হয়তো খাতা-কলমে বলতে পারি। তবে ভোটের মাঠে প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্য থাকে কাকে দিলে জিতে আসতে পারবে। এক্ষেত্রে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে হবে। এখানে আরও বেশি নারীদের আসার সুযোগ করে দিতে হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে সরাসরি নির্বাচনের পক্ষে। তবে আমাদের বাস্তবায়তায় আসতে হবে। যতদিন আমরা যথাযথ পরিবেশে না আসতে পারি, ততদিন সংরক্ষিত আসন রাখতে পারি।

শামা ওবায়েদ বলেন, আমাদের নারীদের কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। কোনো একটি আসনে তিন-চার বছর আগে থেকেই নারীকে কাজ করার সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। তিনি সেখানের উন্নয়ন নিয়ে কয়েক বছর কাজ করে এরপর নির্বাচন করবেন। এভাবে নারীদের আসন বাড়লে আমরা সংরক্ষিত আসন কমাতে পারি।

সাংবাদিক রাজীব আহম্মদ বলেন, যদি সংরক্ষিত আসন রাখা হয়, সেক্ষেত্রে অন্তত যেন কারা তাদের নারী প্রার্থী হবেন, তা আগেই প্রকাশ করা হয়। যেন জনগণ জানতে পারেন, কারা তাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন।

সভায় একই সংসদীয় আসনে পুরুষ ও নারী—দুজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি রাখার বিষয়ে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, এক ঘরে দুই পীর হতে পারে না।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। কারণ একটা বড় দল মাঠে নেই। থাকলে তারা নারীদের এমন জায়গায় নমিনেশন দিত, যেখানে জেতার সম্ভাবনা নেই।

তিনি বলেন, আপনি ৩৩ শতাংশ মনোনয়ন দেবেন, কিন্তু কতজন জিতে আসবে, তা বড় প্রশ্ন। এটা স্থানীয় সরকারে কার্যকর ছিল, তবে দিন দিন এখন সেখানে নারীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা কমছে। ফলে যেটি স্থানীয় সরকারে হয়নি, সেটি জাতীয় পর্যায়ে হবে, এমনটি কীভাবে আশা করতে পারি?

এফএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।