ঢাকা: পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে শেয়ার বাজার থেকে কারসাজির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, সমবায় অধিদপ্তরের উপনিবন্ধক মো. আবুল খায়ের ওরফে হিরু ও তার স্ত্রীসহ ১৫ জনের নামে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সাকিব ও অন্য আসামিরা মিলে শেয়ার ‘কারসাজি’ করে ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকা ‘আত্মসাৎ’ করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়।
অন্য আসামিরা হলেন– হিরুর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান, আবুল কালাম মাদবর, কনিকা আফরোজ, মোহাম্মদ বাশার, সাজেদ মাদবর, আলেয়া বেগম, কাজি ফুয়াদ হাসান, কাজী ফরিদ হাসান, শিরিন আক্তার, জাভেদ এ মতিন, মো. জাহেদ কামাল, মো. হুমায়ুন কবির ও তানভির নিজাম।
দুদক বলছে, এ মামলার আসামিরা ‘পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দ্রুত আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে’ পরিকল্পিতভাবে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সম্পর্কিত প্রচলিত আইন ও বিধান—যেমন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ১৭ ধারা লঙ্ঘন করেছেন বলে তারা প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখতে পেয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ‘তারা নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) অ্যাকাউন্টসমূহে অসাধু, অনৈতিক ও অবৈধ উপায়ে ফাটকা ব্যবসার মতো ধারাবাহিক লেনদেন, প্রতারণামূলক সক্রিয় লেনদেন, ফাটকা ও অনুমাননির্ভর লেনদেনের মাধ্যমে বাজারে কারসাজি করতো’।
‘তারা একটি সংঘবদ্ধ চক্র গঠন করে নির্দিষ্ট কিছু শেয়ারে ধারাবাহিকভাবে ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে দাম বাড়িয়ে প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সেই শেয়ারগুলোতে বিনিয়োগে প্রলুব্ধ করতো। এর ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ব্যাপকভাবে আর্থিক ক্ষতির শিকার হন এবং চক্রটি ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকারও বেশি আত্মসাৎ করে, যা অস্বাভাবিক মূলধন লাভ হিসেবে উপস্থাপন করা হলেও প্রকৃতপক্ষে ছিল অপরাধলব্ধ অর্থ। ’
দুদক বলছে, হিরু শেয়ারবাজার থেকে তোলা অর্থ থেকে ২৯ কোটি ৯৪ লাখ ৪২ হাজার ১৮৫ টাকা তার স্ত্রী সাদিয়ার সহায়তায় বিভিন্ন খাতে স্থানান্তরের মাধ্যমে ‘মানি লন্ডারিং’ করেন।
হিরুর নামে থাকা ১৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৫৪২ কোটি ৩১ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ টাকার ‘অস্বাভাবিক, অযৌক্তিক ও সন্দেহজনক’ লেনদেন হওয়ার কথাও বলা হয়েছে মামলার এজাহারে।
সেখানে বলা হয়েছে, হিরুর কারসাজি করা প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড ও সোনালী পেপারস লিমিটেডের শেয়ারে সাকিব আল হাসান বিনিয়োগ করেন।
‘এতে তিনি মার্কেট ম্যানিপুলেশনে সক্রিয়ভাবে যোগ দেন এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ওই কারসাজিকৃত শেয়ারে বিনিয়োগে প্রতারণার মাধ্যমে প্রলুব্ধ করে তাদের ২ কোটি ৯৫ লাখ ২ হাজার ৯১৫ টাকা রিয়ালাইজড ক্যাপিটাল গেইনের নামে অপরাধলব্ধ আয় হিসেবে শেয়ার বাজার থেকে উত্তোলনপূর্বক আত্মসাৎ করেন। ’
এসএমএকে/আরবি