ঢাকা: আলাদা সড়ক দুর্ঘটনায় শুক্রবার (০৯ জানুয়ারি) মধ্য রাত থেকে সকাল পর্যন্ত রাজধানীর ও এর আশপাশের এলাকায় নিহত হয়েছেন মোট ৯ জন। আর আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জনের মতো।
শুক্রবার (০৯ জানুয়ারি) মধ্য রাত থেকে সকাল ৯টার মধ্যে এ দুর্ঘটনাগুলো ঘটে।
এরমধ্যে, রাজধানীর গুলশান শাহজাদপুর তৃপ্তি হোটেলের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় নিহতরা হলেন, বিল্লাল হোসেন (৩০)। তিনি পেশায় রিকশাচালক। আবু তাহের ভূইয়া (৬০)। তিনি পেশায় নিরাপত্তাকর্মী এবং মো. লিটন (৩০), তিনি পেশায় রিকশাচালক।
সড়ক দুর্ঘটনার পর বিল্লাল ও আবু তাহেরকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে তাদের মৃত্যু হয়। এছাড়া ঘটনাস্থলে নিহত হন রিকশাচালক মো. লিটন।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন, ইয়াদুল (১৬)। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমি পেশায় হালুয়া-রুটি বিক্রেতা। আমি ওই স্থানে (শাহজাদপুর তৃপ্তি হোটেলের সামনের রাস্তায়) দাঁড়িয়ে হালুয়া-রুটি বিক্রি করছিলাম। তার পাশে একটি খালি বাস দাঁড়িয়ে ছিল। এমন সময় ওই বাসটিকে সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাস এসে ধাক্কা দিলে দুর্ঘটনা ঘটে। এতে পাশেই বসে থাকা রিকশাচালকসহ আরও কয়েকজন আহত হন- বলে আহত ইয়াদুল প্রাথমিকভাবে জানান।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে তিনজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনার পরপর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। দুর্ঘটনার কারণ ও বিস্তারিত খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই বাসটিকে (সুপ্রভাত পরিবহন, ঢাকা মেট্রো- জ-১১-২৭৫৮) আটক করা হয়েছে।
আরেকটি (দ্বিতীয়) দুর্ঘটনা হলো, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ধামরাইয়ে বাসচাপায় ৪ জনের মৃত্যু।
শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ঢাকার ধামরাইয়ের জয়পুরা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- যশোর শহরের হুশতলা মৃত মোশারফ হোসেনের ছেলে রইচ উদ্দিন (২৭), মৃত মোতালেব হোসেনের ছেলে হাজী নাজিম উদ্দিন (৪০) এবং মৃত সাহেব আলীর ছেলে নাসির উদ্দিন (৪২)। এছাড়া দুপুরে প্রাইভেটকারের চালক রেজোয়ান (২৭) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামে) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার বাড়ি যশোর সদর উপজেলার সাড়াপোল রুপদিয়া গ্রামে।
ধামরাই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সেকান্দার আলী বাংলানিউজকে জানান, সকালে টঙ্গীর ইজতেমাগামী একটি প্রাইভেটকার ধামরাইয়ের জয়পুরা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছালে মানিকগঞ্জগামী একটি বাস প্রাইভেটকারটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হন। এ সময় প্রাইভেটকারের চালক গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে গণস্বাস্থ্য মেডিকেলে পাঠানো হয়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
তৃতীয়টি, রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানাধীন হলি ল্যাব ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে পিকআপ ভ্যান চাপায় অজ্ঞাত পরিচয় এক নারীর (৩৫) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এসে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠায়। উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী হোসেন খান বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রাথমিকভাবে ওই নারীর নাম-পরিচয় জানা যায়নি। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
চতুর্থটি, রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে গণভবনের পূর্ব পাশে কাভার্ড ভ্যান চাপায় মো. মিলন (২৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু।
বৃহস্পতিবার দিনগত মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়, নিহতের বাবার নাম আবদুল আলী। তাদের বাড়ি ভোলা জেলায়। বর্তমানে মিলন মোহাম্মাদপুর সাতমসজিদ হাউজিংয়ে থাকতো।
শেরেবাংলা থানার ডিউটি অফিসার এসআই কামাল হোসেন বাংলানিউজকে খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
এছাড়াও, বৃহস্পতিবার (০৮ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর কাঁটাবনে ট্রাকের ধাক্কায় রিমা আক্তার নামে ইডেন কলেজের এক ছাত্রী নিহত হন। নিহত রিমা ইডেন কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে পড়তেন। তার গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরে। এ ঘটনায় আহত হন ইমন নামে আরেকজন।
ইডেন ছাত্রী ইমার মৃত্যুসহ রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় গত ১২ ঘণ্টায় ১০ জন মানুষ প্রাণ হারালেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৫