খুলনা: ‘এতো দিন অবরোধ চলছে। এর ভিতর আবার আইজ হরতাল।
দিনমজুর আব্দুল ওহাব আক্ষেপের সঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন সহকর্মী আনোয়ারের কাছে। তাদের সঙ্গে বসে থাকা ১৫-২০ জন দিনমজুরও আলোচনা করছিলেন হরতাল আর অবরোধের মধ্যে পার্থক্য নিয়ে।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের ডাকে চলমান অবরোধের পাশাপাশি বৃহস্পতিবারের (১৫ জানুয়ারি) হরতাল চলাকালে সকালে খুলনা মহানগরীর সাত রাস্তার মোড়ে কথা হয় একদল দিনমজুরের সঙ্গে।
এ সময় তারা বাংলানিউজকে বলেন, হরতাল-অবরোধে আমাগো এক দিন কাজ হইলে তিনদিন হয় না। পোলাপান নিয়ে না খেইয়ে থাকতি হয়। শীতের জামা কাপড় কিনতি পারতিছি না। আমাগো কেউ খোঁজ নেয় না। নেতানেত্রীরা খালি কয়, সবকিছু নাহি আমাগো ভালোর লাইগা করে। না খাইয়ে থাকাডা কোন ভালো তা বুঝি না।
দিনমজুর আনোয়ার জানান, হরতাল-অবরোধে মহাজনরা তাদের কাজে ডাকেন না। ফলে কাজ না পেয়ে প্রতিদিন তাদের মতো শত শত শ্রমিককে নিরাশ হয়ে এভাবে বসে থাকতে হয়। কেউ কেউ বাড়ি যেতে চান না। কারণ বাড়ি গেলে বাজার সদাই করতে টাকা লাগবে। ছেলেমেয়েদের তো আর বলা যায় না যে, কাজ পাই না বলে বাজার হয়নি।
চলমান অবরোধ ও হরতাল প্রসঙ্গে তারা যা বললেন তার সারমর্ম অনেকটা এমন- দুই প্রধান দলের মারমুখী অবস্থানের কারণে সৃষ্ট রাজনৈতিক সহিংসতা ও অচলাবস্থা তাদের ভোগাচ্ছে। সংঘাতের রাজনীতির জাঁতাকলে গরিব মানুষ দিন দিন হচ্ছে কর্মহীন। টানা অবরোধ আর নাশকতায় মানুষ মরছে। অথচ দুই দল অনড়।
সরকার ও বিরোধী জোটের মধ্যে সৃষ্ট সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তারা জানান, এভাবে চলতে থাকলে দেশের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহতার দিকে যাবে। গরিব মানুষ না খেয়ে মরবে। দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। যা কারও কাম্য নয়।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৫