রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি থেকে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের অখণ্ডতা রক্ষায় যে কোনো অশুভ শক্তিকে দৃঢ়ভাবে প্রতিহত করতে আমাদের সেনাবাহিনী সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ জানুয়ারি) রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের শীতকালীন অনুশীলন শেষে দরবারে বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন।
সৈনিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মনে রাখবেন জনগণই দেশের শক্তি, আপনারা জনগণেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমাদের সবার দায়িত্ব সাধারণ মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন কাজ করা। তাই জনগণের আস্থা অর্জন অত্যন্ত জরুরি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ মহড়া ৫৫ পদাতিক ডিভিশন তথা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্বের উজ্জ্বল স্বাক্ষর বহন করছে। সেনাবাহিনী পেশাগত কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি দেশ ও জাতির প্রয়োজনে অর্পিত দায়িত্ব পালন করে আসছে। গত নির্বাচনের সময় আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব নিরপেক্ষ ও দক্ষতার সঙ্গে পালন করে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে সহযোগিতা করেছে।
তিনি বলেন, প্রতিরক্ষা বাহিনী জয়ী হতে পারে, যদি তারা মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করতে পারে। আমাদের রাজনীতিবিদদের জন্য এটা যেমন প্রয়োজন একইভাবে সাধারণ মানুষের উন্নয়নের জন্যও প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, একটি আধুনিক ও চৌকস সশস্ত্রবাহিনী গড়ে তুলতে আমাদের সরকার বদ্ধ পরিকর। এজন্য ১৯৭৮ সালে জাতির পিতা প্রণীত প্রতিরক্ষা নীতির আলোকে ফোর্সেস গোল-২০৩০ প্রণয়ন করেছি। এটা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এরই মধ্যে সিলেটে ১৭ পদাতিক ডিভিশন এবং রামুতে ১০ পদাতিক ডিভিশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। রাজবাড়ী এবং পটুয়াখালির লেবুখালিতে সেনানিবাস স্থাপনের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। পদ্মা সেতুর নির্মাণ ও নিরাপত্তার জন্য একটি কম্পোজিট ব্রিগেড প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি জেনে খুশি হয়েছি যে, পূর্বের মতো এবারের প্রশিক্ষণেও আনসার এবং বিএনসিসি ক্যাডেটদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে। আধা-সামরিক বাহিনী ও জনগণের অংশ গ্রহণের মাধ্যমে মাতৃভুমি রক্ষার এ কৌশল আমাদের সেনাবাহিনীর রণকৌশলকে ভিন্ন ও প্রশংসনীয় মাত্রা যুক্ত করেছে বলে মনে করি।
সেনা সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীকেও ডিজিটালাইজড করা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর প্রতিটি স্তরে ইন্টারনেট সুবিধা দেওয়া হয়েছে। ২০১২ সালে আর্মি ইনফরমেশন টেকনোলজি সাপোর্ট অর্গানাইজেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। একইভাবে বিমান বাহিনী এবং নৌবাহিনীর আধুনিকায়নের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।
সেনাবাহিনীর জন্য নেওয়া বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার দায়িত্ব নেওয়ার পর সেনা সদস্যদের রসদ বৃদ্ধি করে বিমান বাহিনী এবং নৌবাহিনীর সমান করেছি। এছাড়া অস্থায়ী কর্তব্য পালনের জন্য জেসিও ও অন্যান্য পদবীর সৈনিকদের দৈনিক ভাতা, ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার এ দায়িত্ব পালনের দৈনিক ভাতা এবং এলপিআর এর সময়কাল ৪ থেকে ৬ মাস বৃদ্ধি করার প্রস্তাব অনুমোদন করেছি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, সেনা প্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূইয়া, নৌ বাহিনীর প্রধান ভাইস এডমিরাল এম ফরিদ হাবিব, বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার মার্শাল এম ইনামুল বারী, যশোর পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও যশোর এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মতিউর রহমান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৫/আপডেটেড ১৮২৪ ঘণ্টা
** অ্যাসল্ট রিভার ক্রসিংয়ে যুদ্ধ জয় সেনাবাহিনীর