ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ইমিগ্রেশন চালু হবে বাংলাবান্ধায়, চলছে অবকাঠামো উন্নয়ন

মফিজুল সাদিক ও রাজিউর রহমান রাজু | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৫
ইমিগ্রেশন চালু হবে বাংলাবান্ধায়, চলছে অবকাঠামো উন্নয়ন ছবি: দীপু/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বাংলাবান্ধা, তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) থেকে: ভিতরগড়, মিরগড়, রাজনগড়, দেবনগর ও হোসেন দিঘীসহ পাঁচ গড়ের জনপদ পঞ্চগড়। এখানে অবস্থিত হিমালয়ের কোলঘেঁষে বাংলাদেশের সর্বোত্তরের উপজেলা তেঁতুলিয়া।

এই উপজেলায় সম্ভাবনার অন্যতম খাত বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট ও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর।

ভারত ও নেপালের সঙ্গে এখানে পণ্য বিনিময় চলছে। চলছে ভুটানের সঙ্গে পণ্য আনা নেওয়ারও প্রক্রিয়া।

শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) সরেজমিন দেখা গেছে, ভারত থেকে পাথর, গম, ভুট্টা ও বাইসাইকেল আমদানি করা হয়। অন্যদিকে ভারত ও নেপালে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে উৎপাদিত পাট, ব্যাটারি, কোমল পানীয়, সাবান, বিস্কুট, চানাচুর, জুস, কাঁচসহ বিভিন্ন দ্রব্য রফতানি হচ্ছে। এছাড়া নেপাল থেকে চিকন দানা মশুরডাল আমদানি করা হয়।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর সূত্র জানায়, পণ্য আইটেম অবাধে আমদানি-রফতানি করা গেলেও মানুষের যাতায়াতে রয়েছে কড়াকড়ি। এটাকে আরও সহজ করতে শিগগিরই ভারতের সঙ্গে ইমিগ্রেশন চালু হতে যাচ্ছে। সে লক্ষ্যে মহানন্দা নদীর তীর ও ভারতের সীমান্ত সংলগ্ন ১০ একর জমিতে ১৯৯৭ সালে নির্মিত হওয়া বন্দরের অবকাঠামো আরও উন্নত করার কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ডিসেম্বরের ১৭ বা ২২ তারিখে ইমিগ্রেশন চালু হতে পারে।

বাংলাবান্ধা ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্টের  সাধারণ সম্পাদক নাহিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, খুব শিগগিরই ইমিগ্রেশন চালু হবে বলে আশা রাখছি। সে অনুযায়ী অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও নিয়ে আসা হচ্ছে।

সরেজমিন দেখা যায়, এটি বাংলাদেশের একমাত্র স্থলবন্দর যার মাধ্যমে তিনটি দেশের সঙ্গে সুদৃঢ় যোগাযোগ গড়ে ওঠার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাবান্ধা থেকে মাত্র  ৫কি.মি. দূরে শিলিগুড়ি শহর, শীতের শহর দার্জিলিং, নেপাল ৬১ কি.মি., ভুটান ৬৮ কি.মি. এবং চীন সীমান্ত মাত্র ২০০ কি.মি. দূরত্বে অবস্থিত। এই একটি বন্দর যা ৫টি বন্ধু-প্রতীম দেশকে একই সূত্রে আবদ্ধ করতে পারে।

জানা যায়, ভারত ও নেপাল থেকে প্রতিদিন ২০০ থেকে ২২০টি ট্রাক প্রবেশ করে। অন্যদিকে বাংলাদেশি ২০ থেকে ২৫টি ট্রাক ভারত ও নেপালে প্রবেশ করে। অফিস, ইমিগ্রেশন পুলিশ ফাঁড়ি, কাস্টসমের চেকপোস্টসহ সব ধরনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ এগিয়ে চলছে।

বাংলাবান্ধা অ্যান্ড কাস্টমস স্টেশনে দায়িত্বরত সিপাহী প্রমোদ রায় বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিদিন প্রায় ২০ থেকে ২৫টি বাংলাদেশি ট্রাক ভারতে প্রবেশ করে। অন্যদিকে ২০০ থেকে ২২০টি ভারতের ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করে। দ্রুতসময়ে ইমিগ্রেশন চালু হলে এ বন্দরের গুরুত্ব আরও বেড়ে যাবে। পণ্যের পাশাপাশি সহজে ভারত, নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশের মানুষও প্রবশে করতে পারবেন।

পণ্যবোঝাই ভারতীয় ট্রাক ভারত থেকে ক্লিয়ারিং পেপার পাওয়ার পর সারিবদ্ধভাবে বাংলাদেশের সীমানায় অপেক্ষা করতে হয়। একইভাবে পণ্যবোঝাই বাংলাদেশি ট্রাকগুলোকে ভারতীয় সীমান্তে প্রবেশ করে।

ইমিগ্রেশন চালু হলে মানুষও সহজ প্রক্রিয়ায় চারটি দেশে যাতায়াত করতে পারবেন। এতে পঞ্চগড় জেলা পর্যটকদের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হবে। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান ও চীনের মানুষের মিলন মেলা পরিণত হবে পঞ্চগড়ে।

এ বন্দর সম্পূর্ণ চালু হলে শুধু তেঁতুলিয়া-পঞ্চগড় নয়, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এর সুদূরপ্রসারি প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৫
এমআইএস/জেডএস

** মার্কা আইলেই মাঠ গরম
** রসুলপুরে দু’ঘণ্টা আটকে থেকে ছাড়লো কর্ণফুলী এক্সপ্রেস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।