ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঠাকুরগাঁও থেকে মফিজুল সাদিক

‘উন্নয়নের প্রতীক নৌকা’, ‘প্রতিবাদের ধানের শীষ’

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৫
‘উন্নয়নের প্রতীক নৌকা’, ‘প্রতিবাদের ধানের শীষ’ ছবি: দীপু মালাকার/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঠাকুরগাঁও থেকে: ভোটের বাকি মাত্র ১৭ দিন। প্রার্থীদের ব্যস্ততার কোনো শেষ নেই।

ভোট প্রার্থনায় ছুটছেন ভোটারের দ্বারে দ্বারে। একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতির ফুলঝুড়ি নিয়ে হাজির হচ্ছেন প্রার্থীরা। ভোটে নানা কৌশল অবলম্বন করছেন প্রার্থীরা।
 
আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের সার্বিক উন্নয়ন করছে। আগামী ৩০ ডিসেম্বরের পৌরসভা নির্বাচনেও নৌকা  উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে সামনে আবারও এসেছে। অন্যদিকে বিএনপির প্রার্থীরা বলছেন, বর্তমান সরকার বিএনপির নেতাকর্মীদের নির্যাতন, মামলা ও হুলিয়া জারি করেছে। তার প্রতিবাদ হিসেবে ধানের শীষ প্রতীককে বেছে নেবেন ভোটাররা।
 
ঠাকুরগাঁও পৌরসভা নির্বাচনের প্রার্থীরা এভাবেই ভোটারদের কাছে টানতে নানা পদ্ধতিতে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
 
ঠাকুরগাঁও পৌর এলাকার মোট জনসংখ্যা এক লাখ ১০ হাজার। মোট ভোটার ৫২ হাজার ৯৩০ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২৬ হাজার ৫৪৫ জন ও পুরুষ ভোটার ২৬ হাজার ৩৮৫ জন।

নৌকা প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে লড়ছেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক নারী ভাইস চেয়ারম্যান ও ঠাঁকুরগাও জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ তাহমিনা আখতার মোল্লা। অন্যদিকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ছোট ভাই জেলা বিএনপির সহ সভাপতি মির্জা ফয়সাল আমীন। তবে এখনও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী গোলাম সরোয়ার রঞ্জু মাঠে রয়েছেন। এতে করে বাড়তি সুবিধায় রয়েছেন তাহমিনা মোল্লা।
 
শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজে কথা হয় আওয়ামী লীগের মেয়ন প্রার্থী তাহমিনা মোল্লার সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমার নেত্রী(শেখ হাসিনা) আমাকে মনোনীত করেছেন। বর্তমান সরকার দেশে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করছে। এমনকি পৌরসভায় গত পাঁচ বছরে শত কোটি টাকার বেশি টাকার উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। আমার বিশ্বাস, পৌরবাসী নৌকাকে উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করে বিপুল ভোটে আমাকে বিজয়ী করবেন।
 
‘আমার নেত্রী ‘ভিশন ২১’ বাস্তবায়ন করতে চান। আমি নির্বাচিত হলে পৌরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে নেত্রীর পাশে দাঁড়াবো। পৌর এলাকার ঘরে ঘরে চাকরি দিতে না পারলেও অনেক যুব সমাজের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবো। ২০০ থেকে ২৫০টি নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। এগুলো বাস্তবায়ন করা হলে অনেক কর্মসংস্থান হবে।

ব্যক্তিজীবনে অবিবাহিত তাহমিনা মোল্লা জনসেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন। ফ্রিড মাতৃছায়া অটিস্টিক শিশু নিকেতন তৈরি করেছেন তিনি। এখানে ১৭৪ জন অটিস্টিক শিশু রয়েছে।
 
তাহমিনা মোল্লা বলেন, আমার কোনো ঘর-সংসার নেই। পৌরসভার জনগণই আমার ঘর-সংসার। সামনে পৌরসভার আরও উন্নয়ন করতে চাই।
 
অন্যদিকে ভোট প্রার্থনায় বাড়ি বাড়ি ছুটছেন মির্জা ফখরুলের ভাই মির্জা ফয়সাল। শুক্রবার ঠাকুরগাঁও বাসস্ট্যান্ডে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা হয় বিএনপির এই মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে।
 
মির্জা ফয়সাল বলেন, আমি ৮০ শতাংশ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হবো। আমি নিশ্চিত বলতে পারি, বিপুল ভোটে জয়লাভ করবো। সরকার যদি প্রশাসন যন্ত্রকে ব্যবহার না করে তবে আমার জয় নিশ্চিত। আমার বাবা (মরহুম রুহুল আমিন) সাবেক মন্ত্রী ‍ছিলেন। এর আগে ১৭ বছর পৌরসভার নির্বাচিত প্রতিনিধিও ছিলেন তিনি। আমার ভাই (মির্জা ফখরুল) পৌরসভার মেয়র হিসেবে রাজনীতি শুরু করেন। আমার বিশ্বাস, সেই সুযোগ আমিও পাবো।
 
৮০ শতাংশ ভোটের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বিএনপির নেতাকর্মীদের নির্যাতন করেছে, মামলা ও হামলা করে ঘরছাড়া করেছে। আমার বিশ্বাস পৌরসভায় নির্যাতনের প্রতিবাদ হিসেবে ধানের শীষ প্রতীককেই মানুষ বেছে নেবেন।

সরেজমিনে গেলে দুই বড় দলের সমর্থকেরা অনেকেই অভিযোগ করেন, তারা এবারের পৌর নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থী পাননি। অনেকের দাবি, বিএনপির প্রার্থীর চেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী গোলাম সারোয়ার রঞ্জুর সমর্থন বেশি। গত পৌরসভায় মাত্র ৪ হাজার ভোটে পরাজিত হন তিনি।

অন্যদিকে সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র এসএম এ মঈনকে মনোনয়ন না দেওয়ায় দলের অনেক নেতাকর্মী-সমর্থকরা ক্ষুব্ধ।
 
তবে এখনও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী গোলাম সরোয়ার রঞ্জু মাঠে থাকায় কিছুটা ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী তাহমিনা মোল্লা।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৫
এমআইএস/এএসআর

** নাম্বার ওয়ান বানাবো পঞ্চগড় পৌরসভাকে’

** ভোটে ঝোপ বুইজে কোপ দিবো ব্যাটা’

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।