ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঢামেকে সবার জিজ্ঞাসা- সজীব ভাই কই?

আবাদুজ্জামান শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৫
ঢামেকে সবার জিজ্ঞাসা- সজীব ভাই কই? ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে সোমবারের সকালটা যেন একটু ভিন্ন। ঢামেকের কর্মচারী থেকে শুরু করে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সবার মুখে একটি প্রশ্ন- সজীব ভাই কই?

দৈনিক পত্রিকা বাংলাদেশ প্রতিদিন, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময়, যমুনা, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ও বাংলা ভিশনসহ বিভিন্ন পত্রিকা ও টেলিভিশনের ঢামেক প্রতিনিধি হিসেবে বেশ কয়েক বছর ধরে সাংবাদিকতা করছেন আওরঙ্গজেব সজীব।

তাই ঢামেক হাসপাতালে তাকে চেনেন না এমন ব্যক্তির সংখ্যা খুবই কম।

সোমবার (২১ ডিসেম্বর) সজীবকে নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিখোঁজের সংবাদ প্রকাশ হলে সবারই মধ্যে এই প্রশ্ন দেখা দেয়।

রোববার (২০ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ‘তাকওয়া’ নামে যাত্রীবাহী লঞ্চ থেকে ধলেশ্বরী নদীতে পড়ে নিখোঁজ হন সাংবাদিক সজীব। পরে খবর পেয়ে ঢাকায় ছুটে আসেন তার ভাই রাজনসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা।

এদিকে, সোমবার পুরান ঢাকার উর্দু রোডে সাংবাদিক সজীবের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, তার স্ত্রী মোরশেদা বেগম ও তার দুই সন্তান ইসমত আরা সাবা এবং নূর মোহাম্মদ সোহাগ নির্বাক হয়ে বসে আছেন। মোরশেদা বার বার হাত বুলাচ্ছেন লঞ্চ থেকে উদ্ধার হওয়া স্বামীর মোবাইল ফোন ও আইডি কার্ডটিতে। মেয়ে ইসমত আরা দরজার দিকে তাকিয়ে আছে কখন আসবে তার বাবা!

মোরশেদা বাংলানিউজকে বলেন, গত শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সজীবসহ আমরা বাইরে খাওয়া-দাওয়া করি। খাওয়া শেষে সজীব আমাকে বলে, ‘আমি টঙ্গী যাচ্ছি। আমাদের এক সাংবাদিক মারা গেছেন। আমি নাও ফিরতে পারি। তোমরা চিন্তা করো না। ’ এই বলে সে চলে যায়। রাতে তার মোবাইল বন্ধ পাই। পরে ছেলে সোহাগ তার বাবাকে একটি এসএমএস পাঠায়। কিন্তু এসএমএসের উত্তর আসে না।

কিছুটা থেমে মোরশেদা আরও বলেন, পরে রোববার (২০ ডিসেম্বর) ভোর ৫টার দিকে সজীব বাসায় আসে। এসেই বলে আমার মোবাইলে চার্জ নেই। পরে সে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। সকাল ৭টার দিকে উঠে সে বেড়িয়ে যায়। যাওয়ার আগে বলে আমি অফিস যাচ্ছি। ওটাই আমাদের শেষ কথা।

‘আমি শুনেছি সে লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে। কেন সে ঝাঁপ দেবে? না কি এর পিছনে অন্য কোনো কারণ আছে? যাই হোক, আমি কিছুই চাই না। আমি শুধু আমার স্বামীকে চাই। আমার ছেলে মেয়েরা তাদের বাবাকে চায়’- কান্নাজড়িত কণ্ঠে বললেন মোরশেদা।

এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বলেও জানান তিনি। জিডি নম্বর-১২১১।

এদিকে, নিখোঁজ সাংবাদিকের সন্ধানে মুন্সীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল মুক্তারপুর নৌ ফাঁড়িতে অবস্থান করছে। ধলেশ্বরী নদীর কোন স্থানে সজীব লঞ্চ থেকে পড়েছে, সেই স্থান শনাক্ত না হওয়ায় ওইদিন বিকেল ৫টা পর্যন্ত ডুবুরিদল তল্লাশি কাজ শুরু করতে পারেনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৫
এজেডএস/আরএইচএস/টিআই/এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।