ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শহীদদের নিয়ে খালেদার মিথ্যাচার

বিএনপির ক্ষমা প্রার্থনার দাবি নির্মূল কমিটির

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৫
বিএনপির ক্ষমা প্রার্থনার দাবি নির্মূল কমিটির

ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মাসে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’। খালেদার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসবিরোধী পাকিস্তানপ্রেমী এ বক্তব্যের জন্য দেশ ও জাতির কাছে বিএনপির ক্ষমা প্রার্থনার দাবি করেছে সংগঠনটি।


 
সংগঠনের সভাপতি বিচারপতি গোলাম রাব্বানী, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, সহ সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, চলচ্চিত্র নির্মাতা শামীম আখতার ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) যৌথ বিবৃতিতে এ নিন্দা ও দাবি জানান।

বিবৃতিতে নির্মূল কমিটির নেতারা বলেন, ইতিহাস বিকৃতি প্রতিহতকরণের উদ্দেশ্যে গণহত্যার ভিকটিম ইউরোপের ১৪টি দেশ ‘হলোকস্ট অস্বীকৃতি আইন’ প্রণয়ন করেছে। এ আইনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের গণহত্যার পরিসংখ্যান অস্বীকার করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

ইউরোপের ওই ‘হলোকস্ট ডিনাইয়াল অ্যাক্ট’- এর মতো আইন প্রণয়নেরও দাবি জানান তারা। বিবৃতিতে তারা বলেন, এ আইন প্রণীত না হলে ভবিষ্যতে বিএনপি যদি কখনও ক্ষমতায় আসে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনার লেশমাত্র থাকবে না এবং একাত্তরের শহীদদের অবমাননাও বন্ধ হবে না।
 
‘২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসে যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, তখন থেকে আমরা বহুবার এ আইন প্রণয়ণের দাবি জানিয়ে আসছি’ বলেও উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দেশ ও জাতি যখন মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের ৪৪তম বার্ষিকী উদযাপন করছে, যখন পাকিস্তান যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সমালোচনা করে একাত্তরের গণহত্যা অস্বীকার করছে, ঠিক তখনই বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সরকারি ও স্বীকৃত পরিসংখ্যান অস্বীকার করে আবারও প্রমাণ করেছেন, একাত্তরে তিনি যেভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অনুগত ছিলেন, এখনও সেই অবস্থানে অটল রয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব প্রদানকারী তার সরকার বহুবার বলেছে, একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসররা বাংলাদেশে ৩০ লাখ নিরীহ নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করেছে। সোভিয়েত বার্তা সংস্থা ‘তাস’ ‘ইউএনআই’ ও ‘ন্যাশনাল জিয়োগ্রাফিক’সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও সংস্থাও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা ৩০ লাখই বলেছে। তবে গণহত্যাকারী পাকিস্তান এবং তাদের গণহত্যার সহযোগীরা সব সময় এ পরিসংখ্যান অস্বীকার করেছে।

‘যে কোনো দেশে গণহত্যার সংখ্যা নির্ধারিত হয় সে দেশের সরকারের দাবি অনুযায়ী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মিত্রশক্তি দাবি করেছে, হিটলারের নাৎসি বাহিনী ৬০ লাখ ইহুদিকে হত্যা করেছে। ন্যূরেমবার্গ ট্রাইব্যুনালে নাৎসি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময় তাদের আইনজীবীরা এবং পরবর্তীকালে নাৎসিদের প্রতি সহানুভূতিশীলরা এ পরিসংখ্যান অস্বীকার করলেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাসে সরকারি পরিসংখ্যানই বিবৃত হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৫
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।