ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঢাকা জেলা পরিষদের সাবেক প্রধানকে বাদ দিয়ে দুদকের মামলা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৫
ঢাকা জেলা পরিষদের সাবেক প্রধানকে বাদ দিয়ে দুদকের মামলা

ঢাকা: ঢাকা জেলা পরিষদের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডেভিড পল খন্দকারকে বাদ দিয়ে অর্থ আত্মসাতের একটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানায় দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১’র উপ-পরিচালক আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

মামলার বিষয়ে বাদী বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেন।

এজাহারে অভিযোগ আনা হয়েছে, রাজধানীর ডেমরায় অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হাফিজুর রহমান বিদ্যালয়ের কোনো উন্নয়ন কাজ না করেই ‘মেসার্স জারা কনস্ট্রাকশন’ হাতিয়ে নেয় ১৪ লাখ ৮৫ হাজার ৫৯৫ টাকা। আর এ টাকা পরষ্পর যোগসাজশে আত্মসাতের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির মালিক মো. নাফিস উদ্দিন এবং জেলা পরিষদের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামানকে আসামি করা হয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ছিলেন ডেভিড পল খন্দকার। কিন্তু মামলায় তাকে আসামি করা হয়নি। তবে মামলা পরবর্তী তদন্তে তার অভিযোগ পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানায় অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট সূত্রটি।

দুদক সূত্র জানায়, ঢাকা জেলায় উন্নয়ন প্রকল্পের নামে চলে শত শত কোটি টাকা লুটপাট। স্কুল, মসজিদ, মাদরাসা, মন্দির, পাঠাগার উন্নয়নের নাম করে ভুয়া বিল-ভাউচার এবং ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে হাতিয়ে নেওয়া হয় এসব অর্থ। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব তদন্ত এবং দুদকের অনুসন্ধানেও এর প্রমাণ মেলে। এ প্রেক্ষিতে ইতোপূর্বে ২০টিরও বেশি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন। এখনও চলছে ধারাবাহিক এ অনুসন্ধান কার্যক্রম।

এ প্রক্রিয়ায় চলতি বছর মার্চে এক প্রতিবেদনে ঢাকা জেলা পরিষদ প্রশাসনের সাবেক প্রধান নির্বাহী ডেভিড পল খন্দকার এবং সহকারী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমানের বিরুদ্ধে পছন্দসই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ৮৫ কোটি টাকার কার্যাদেশ প্রদানের বিষয়টি উঠে আসে। চলতি বছর ৩১ মার্চ দাখিল করা অনুসন্ধান প্রতিবেদনে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সুপারিশ করা হয়।

কমিশন সেটি সরাসরি মঞ্জুর না করে কিছু তথ্য চেয়ে (কয়েরিজ) পুনঃঅনুসন্ধানের নির্দেশ দেয়। পুনঃঅনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৩ সালের ২১ আগস্ট দরপত্র বিজ্ঞপ্তির (নং ৩/২০১১-১২) ৫৫ নম্বর গ্রুপের আওতায় ডেমরার মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হাফিজুর রহমান বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কল্পে মেসার্স জারা কনস্ট্রাকশনকে কার্যাদেশ দেয়। প্রকল্পের ব্যয় ছিল ৩৮ লাখ টাকা। কার্যাদেশে প্রকল্প সম্পন্ন করার তারিখ ছিল ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর।

দরপত্র বিজ্ঞপ্তির (নং ৭/২০১১-১২) গ্রুপ ৬৬’র আওতায় ২০১৩ সালের ২৯ মে খিলক্ষেত  মধ্যপাড়া (রোড নং-১,নিকুঞ্জ-২) জামে মসজিদ উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যাদেশ দেয় ‘মেসার্স প্যারাগন ইন্টারন্যাশনাল’ নামক প্রতিষ্ঠানকে। এটির বরাদ্দ ছিল ২৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রকল্প সম্পন্নের তারিখ ২০১৩ সালের ৩১ জুলাই। তবে নির্দিষ্ট তারিখে প্রকল্প দু’টি শেষ না করা হলেও ঢাকা জেলা প্রশাসন এ দু’টি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করেনি। বাজেয়াপ্ত করেনি জামানতও। উপরন্তু জারা কনস্ট্রাকশন উন্নয়ন প্রকল্পের বিপরীতে অতিরিক্ত আরও ১৪ লাখ ৮৫ হাজার ৫৯৫ টাকা উত্তোলন ও আত্মসাৎ করে। যা দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৫
এডিএ/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।