ঢাকা: একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার ছয় আসামির বিরুদ্ধে আগামী ২০ মার্চ তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
ওই মামলার আসামি ছিলেন সাতজন।
রোববার (১৭ জানুয়ারি) তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করে প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন মুন্নি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে দুই মাসের সময়ের আবেদন জানান। চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ার উল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল ২০ মার্চ দিন ধার্য করেন।
আসামিপক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আব্দুশ শুকুর খান এবং গাজী এমএইচ তামিম উপস্থিত ছিলেন।
গত বছরের ১২ আগস্ট গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর পূর্বধলার জারিয়া ইউনিয়নের গণকপাড়া গ্রামের মৃত মৌলভী হোসেন আহম্মদ ওরফে হোসেন মৌলভীর ছেলে আব্দুর রহমান ও ঘাগড়া ইউনিয়নের সুনাইকান্দা গ্রামের মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে আহাম্মদ আলীকে যার যার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে স্থানীয় পুলিশ। ১৩ আগস্ট তাদেরকে হাজির করা হলে কারাগারে পাঠিয়ে দেন ট্রাইব্যুনাল। ২৮ অক্টোবর কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান আহাম্মদ আলী।
আসামিদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের ২১ আগস্ট দুপুর একটায় রাজাকার বাহিনী নিয়ে পূর্বধলা উপজেলার বাড়হা গ্রামের আব্দুল খালেককে গুলি করে হত্যার পর কংস নদীর পানিতে মরদেহ ভাসিয়ে দেওয়ার অভিযোগে মামলা রয়েছে। শহীদ আব্দুল খালেকের ছোট ভাই ও বাড়হা গ্রামের মৃত আমছর উদ্দিন তালুকদারের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা আঃ কাদির বাদী হয়ে ২০১৩ সালে চার রাজাকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান তদন্ত কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগটি জমা দেন।
২০১৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ওই ছয়জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তদন্ত করছেন তদন্ত কর্মকর্তা শাহজাহান কবির।
মামলার বাদী মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদির বাংলানিউজকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি এবং রাজারবাগ পুলিশ লাইনে কর্মরত তার বড় ভাই আব্দুল হেকিম ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে অবস্থান করছিলেন। রাজাকাররা এ খবর জানতে পেরে তাদের বাড়িতে গিয়ে তার বড় ভাই আব্দুল খালেককে পিঠমোড়া করে বেঁধে মুক্তিযোদ্ধা ভাইদের খোঁজ খবর জানতে চান। ভাইদের কোনো খোঁজ না দেওয়ায় তখন রাজাকার বাহিনী ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ঘরে লুটপাট করে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। পরে আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে ভাই খালেককে ধরে নিয়ে গিয়ে জারিয়া রাজাকার ক্যাম্পে দুই দিন আটক রেখে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। পরদিন ২১ আগস্ট তাকে জারিয়া কংশ নদীর পাড়ে গুলি করে হত্যা করে নদীর পানিতে মরদেহ ভাসিয়ে দেন রাজাকাররা।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৬
এমএইচপি/এএসআর