তিনি সাংবাদিকতায় আসেন ১৯৫৭ সালে। দীর্ঘ প্রায় অর্ধ-শতাব্দী সন্তোষ গুপ্ত সাংবাদিকতা জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে বেঁচে ছিলেন।
কর্মজীবনে তিনি দৈনিক আজাদ ও দৈনিক সংবাদে কাজ করেছেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সন্তোষ দৈনিক সংবাদের সিনিয়র সহকারী সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
তার অসাধারণ তীক্ষ্ম ‘অনিরুদ্ধের কলাম’ বিদগ্ধ মহলে সমাদৃত ছিল। দীর্ঘ দুই যুগে (১৯৭৮-২০০২) সহস্রাধিক কলাম লিখেছিলেন; এর বাইরেও তার লেখা সম্পাদকীয় ও অন্যান্য প্রবন্ধ-নিবন্ধের সংখ্যা অসংখ্য। সাধারণভাবে সংবাদপত্রের লেখা সাম্প্রতিক প্রয়োজন মেটানোর জন্য; তাই সাহিত্যের চিরস্থায়ী আসন তার দাবি নয়। কিন্তু অনিরুদ্ধের কলামের মতন বেশ কিছু রচনা সমকালীন হয়েও সর্বকালীন; সাম্প্রতিক হয়েও কালোত্তীর্ণ।
সাংবাদিকতা পেশায় আসার আগে বামধারার রাজনীতির সংগে যুক্ত ছিলেন তিনি । সন্তোষ গুপ্ত শিক্ষা জীবন শেষে কলকাতায় আইজি অব প্রিজনস্ অফিসে চাকরি নিয়েছিলেন। দেশভাগের সময় তিনি পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন। কিন্তু বামধারা রাজনৈতিক সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কারণে তাকে সে চাকরি হারাতে হয়। রাজনৈতিক কারনে তাকে একাধিকবার জেলেও যেতে হয়েছে। ১৯৭১ সালে তিনি প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য বিভাগে কর্মরত ছিলেন।
শিল্প-সাহিত্যের বিভিন্ন অঙ্গনে সন্তোষ গুপ্তের অবাধ বিচরণ ছিল। কবিতা, শিল্পকলা, চিত্রকলা, রাজনীতি, সাহিত্য, সাংবাদিকতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তার ১৮টি গ্রন্থ রয়েছে। সম্পাদনা করেছেন বহু গ্রন্থ। তার অসংখ্য লেখা এখনও অগ্রন্থিত রয়েছে। সাংবাদিকতা ও সাহিত্যে অবদান রাখার জন্য তিনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার স্বাধীনতা পদক (মরণোত্তর), একুশে পদক, শেরে বাংলা পদক, বঙ্গবন্ধু পদক, মাওলানা তর্কবাগীশ পদক, জহুর হোসেনের স্মৃতি পদক প্রভৃতি পুরস্কার, পদক ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।
২০০৪ সালের ৬ আগস্ট মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণজনিত কারণে প্রায় ৮০ বছর বয়সে এই অসাধারণ গুণী সাংবাদিকের জীবনাবসান ঘটে।
কর্মসূচি
সন্তোষ গুপ্তের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচির মধ্যে ছিল সন্তোষ গুপ্ত স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে সকালে পোস্তগোলায় নির্মিত তার স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ এবং সন্তোষ গুপ্তের পরিবারের পক্ষ থেকে তার স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৭
এইচএ/