ফুরফুরে মেজাজেই মন্ত্রী সবার সঙ্গে কথা বলছেন। কখনো অল্প শুনেই পুরো বিষয় উপলব্ধি করছেন।
নীল শার্ট আর চাদর মুড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মন্ত্রী সাক্ষাতপ্রার্থীদের সময় দিচ্ছেন। যতোক্ষণ মানুষজনের ভিড় ততোক্ষণই জেগে আছেন তিনি। শেষ দর্শনার্থীকে সময় দেওয়ার পর তবেই কক্ষ থেকে সোজা দোতলায় উঠবেন।
কোনো কোনো দিন হতে পারে গভীর রাত। কিন্তু তাতেই বা কী? মন্ত্রী যখনই ঘুমান, উঠবেন ঠিকই ভোরে।
ফজরের নামাজ আদায় করে খানিক বিশ্রামের পর আবারও শুরু হবে রুটিন ওয়ার্ক। কাজ শুরু হবে সাত-সকাল থেকেই। এরপরেই গন্তব্য মন্ত্রণালয়ে, নয়তো সরকারি কোনো অনুষ্ঠানে।
এসবই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের দিনলিপি। এ মন্ত্রী কাজের মাধ্যমেই সবার নজর কেড়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দক্ষতার সঙ্গে মন্ত্রণালয় পরিচালনার বদৌলতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ওপর আস্থা রেখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রীর দায়িত্ব দেন।
সেই থেকে দিন-রাত একাকার পরিশ্রমেই নিজেকে সক্রিয় রেখেছেন ঢাকা-১২ (তেজগাঁও-রমনা) এলাকার এ সংসদ সদস্য। যেন দম ফেলারও ফুরসত নেই তার।
বাসভবনে আলাপ হলো ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রহমান ও ময়মনসিংহ মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শাহীনুর রহমানের সঙ্গে। বাংলানিউজকে তারা বলেন, মন্ত্রী সব সময়ই ধৈর্যের সঙ্গে সাক্ষাতপ্রার্থীদের কথা শোনেন। তার ওপর অনেক দায়িত্ব। তিনি সব দায়িত্বই পালন করেন আন্তরিকতার সঙ্গে।
বুধবার (১১ জানুয়ারি) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে মন্ত্রীর ধানমন্ডির বাসভবনে দেখা গেলো এমন চিত্র। এ সময় বাংলানিউজের সঙ্গেও কথা বলেন আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় মেয়াদের সরকারে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম এ বীর সেনানী। এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়ে তার কাজের সুযোগ আরও বেড়ে যায়।
এ সুযোগকে কাজে লাগাতে ভুল করেননি তিনি। নিজের মেধা, সততা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে প্রশংসাও কুড়িয়েছেন মন্ত্রী।
নিজের দিন-রাত একাকার পরিশ্রম ও ব্যস্ততা সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিদিন সাক্ষাতপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা শেষ করতেই রাত ২টা বেজে যায়। এরপর ভোরে ফজরের নামাজ পড়ে আরেকটু ঘুমাই। সকাল ৮টায় বাসায়ই আরও আধঘণ্টা সাক্ষাতপ্রার্থীদের সময় দিয়ে মন্ত্রণালয়ের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ি।
মন্ত্রী স্মরণ করিয়ে দেন তিনি ঢাকা-১২ আসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় আসনের এমপি। ফলে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের পাশাপাশি নিজের সংসদীয় এলাকার বাসিন্দাদেরও প্রয়োজনীয় সময় দিতে হয়।
মন্ত্রী জানান, রাজনীতিটা জনগণের জন্য। ফলে তাদের জন্য নিজেকে ব্যস্ততার শেকলে বেঁধেছেন তিনি। জঙ্গিবাদ রুখে দিয়েছে সরকার। জনগণ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনগণকে সম্পৃক্ত করা গেছে।
আর প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় এ কাজটির পেছনে রয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কঠোর পরিশ্রম।
অতীতে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের কোনো না কোনো বিতর্ক স্পর্শ করলেও এক্ষেত্রেও নিজেকে উর্ধ্বে রেখেছেন আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
মন্ত্রী হিসেবে নিজেকে কতোটা সফল মনে করেন?- এ প্রশ্নের উত্তরে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, আমি নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছি। প্রধানমন্ত্রী আমাকে দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। আমাদের সবচেয়ে বড় সফলতা জনগণ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
এর পাশাপাশি পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দারা ভাল কাজ করায় জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার সক্ষম হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
পরিচ্ছন্ন ইমেজের অধিকারী মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। দলীয় নেতাকর্মীদের জন্যও নিবেদিতপ্রাণ। মন্ত্রী বলেন, জেএমবি, হুজি, আনসারুল্লাহ বাংলা টিমসহ বিভিন্ন নামে জঙ্গিরা বিভিন্ন সময়ে আত্মপ্রকাশ করেছে। সবাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মেজর (বহিষ্কৃত) জিয়াসহ নব্য জেএমবি’র বাদ বাকিরাও যেকোনো সময় ধরা পড়বে।
জঙ্গিবাদ দমনে সরকারের শূন্য-সহনশীলতার নীতি সফল হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৭
এমএএএম/এইচএ/