ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আমার সব শেষ, কথা বলে কি হবে!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৭
আমার সব শেষ, কথা বলে কি হবে! নর্দায় পুড়ে যাওয়ার রিকশা গ্যারেজ-ছবি সুমন শেখ

ঢাকা: আগুনে আমার সব শেষ হয়ে গেল। কথা বলে কি হবে! সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বললে কি আর সবকিছু ফিরে পাব। আমার সব শেষ হয়ে গেল। এমন আহাজারি করছিলেন রাজধানীর ভাটারা থানার প্রগতি স্মরণীর নর্দা এলাকার রিকশা গ্যারেজের মালিক রোকেয়া বেগম।

বুধবার ( ৬ ডিসেম্বর) রাতে তার রিকশা গ্যারেজে আগুন লেগে সবকিছু পুড়ে যাওয়ায় তিনি এমন আহাজারি করছিলেন।
রোকেয়া বেগম বলছিলেন, হায়রে আগুন আমার সব সম্বল শেষ করে দিলো।

স্বামীর রেখে যাওয়া সম্পদও শেষ হয়ে গেল। ছেলেটারে নিয়ে এখন কি করব। বারবার বলছিলেন আর মুর্ছা যাচ্ছিলেন। তার এমন বিলাপে ছেলে রাজু মা রোকেয়া বেগমকে সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছিলেন।  

কথা হয় ছেলে রাজুর সঙ্গে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বাবা ( মৃত রহিম) মারা যাওয়ার পর মা এই রিকশা গ্যারেজ দেখা শোনা করতেন। গ্যারেজে ৭০টির মতো রিকশা ছিলো। এর মধ্যে আগুনে পড়ে গেছে প্রায় সব। ৫-১০টি রিকশা ভালো থাকতে পারে। এখন আমরা কি করব। আমাদের সহায় বলতে যা ছিলো তাও শেষ হয়ে গেল। এভাবে বলতে বলতে তিনি নিজেও আহাজারি করতে থাকেন।

আগুনের প্রত্যক্ষদর্শী ও গ্যারেজের সিকিউরিটি গার্ড শাহজাহান বলেন, এখানে একসঙ্গে রিকশার গ্যারেজ, এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের গোডাউন, লেপ তোষকের দোকান ও ১৭টির মতো ঘর ছিলো। প্রথমে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে আগুন লাগে এরপর লেপ তোষকের দোকানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। হায়রে আগুন মুহূর্তের মধ্যে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেল।

রিকশা গ্যারেজের মিস্ত্রী মোকলেস বাংলানিউজকে বলেন, গ্যারেজের মালিক রহিম (মৃত)। তিনি মারা গেছেন কয়েক বছর হলো। এরপর গ্যারেজটি দেখাশোনা করেছিলেন তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম। ২৬ বছর ধরে তিনি এই গ্যারেজে রিকশার কাজ করেন। তিনি রাস্তার বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। হঠাৎ আগুন লাগায় তিনি ভয় পেয়ে যান। এরপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কয়েকটি রিকশা গ্যারেজ থেকে বের কেরে আনেন। তবে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ায় অধিকাংশ রিকশা পুড়ে গেছে। একই সঙ্গে ১৭টি ঘর, লেপ তোষকের দোকানও পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।   

এদিকে রাত ৯টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে রাত সোয়া ১০টার দিকে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট কাজ করে। আগুনে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেলেও কেউ আহত হননি। তবে আগুনে ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ০৪১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১৭
এসজে/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।