ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

৮ ডিসেম্বর ঝালকাঠি মুক্ত দিবস

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১৭
৮ ডিসেম্বর ঝালকাঠি মুক্ত দিবস গণকবর অবহেলায় পড়ে রয়েছে। ছবি: বাংলানিউজ

ঝালকাঠি: ৮ ডিসেম্বর ঝালকাঠি মুক্তদিবস। ১৯৭১ সালের এদিনে জেলার ঝালকাঠি ও নলছিটি থানা হানাদার মুক্ত হয়েছিলো।

এদিনে বিজয়ীর বেশে মুক্তিযোদ্ধারা ঝালকাঠি শহরে প্রবেশ করেন। জেলার সর্বত্র আনন্দ-উল্লাসের পাশাপাশি শুরু হয় হারানো স্বজনদের খোঁজার পালা।

কেউ জীবিত পেয়েছেন স্বজনদের আবার কেউ চিরতরে হারিয়েছেন আপনজনদের।

এদিকে দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলসহ বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

১৯৭১ সালের ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত ঝালকাঠির নিয়ন্ত্রণ ছিলো মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে। ২৭ এপ্রিল ভারী কামান আর মর্টার শেলের গোলা নিক্ষেপ করতে করতে পাকহানাদার বাহিনী ঝালকাঠি শহর দখলে নেয়। এরপর পাকবাহিনী তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর আর আল শামসের সহায়তায় জেলাজুড়ে হত্যা, ধর্ষণ, লুট আর অগ্নিসংযোগসহ নারকীয় নির্যাতন চালায়।

ঝালকাঠি শহরের পৌরসভা খেয়াঘাট, পালবাড়ি গোডাউনঘাট, রমানাথপুর মসজিদ সংলগ্ন পুকুর পাড়, দেউলকাঠি, গাবখান, খেজুরা গ্রামে শত শত নিরীহ বাঙালিকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন মুক্তিযোদ্ধাসহ নিরীহ বাঙালিদের ধরে এনে পালবাড়ী টর্চার সেলে আটকে রেখে নির্মম নির্যাতন চালানোর পর সুগন্ধা তীরবর্তী পৌরসভা খেয়াঘাট এলাকায় গুলি করে হত্যা করা হতো।

এছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা ও বাঙালিকে হত্যা করে মাটিচাপা দেওয়া হয়। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল প্রতিরোধে টিকতে না পেরে ৭ ডিসেম্বর শহরে কারফিউ জারি করে পাকবাহিনী ঝালকাঠি ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরের দিন ৮ ডিসেম্বর রাজাকাররা তরুণ মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের কাছে আত্মসমর্পণ করে। যেদিন গভীর রাত পর্যন্ত জয় বাংলার স্লোগানে মুখোরিত হয় ঝালকাঠির আকাশ বাতাস।

একই দিন পাকহানাদার মুক্ত হয় ঝালকাঠির বর্তমান নলছিটি উপজেলা। ৭ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার ক্যাম্পে আক্রমণ করে রাজাকারদের নিরস্ত্র করেন।

মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন পান্না জানান, পাকবাহিনী শহর ছেড়ে যাওয়ার পর ৮ ডিসেম্বর রাজাকারা পালাতে শুরু করেছিল। এ সময় তরুণ মুক্তিযোদ্ধারা জয় বাংলার স্লোগান দিয়ে রাজাকারদের ঘিরে ফেললে রাজাকারা নিজেদের রাইফেল ফেলে আত্মসমর্পণ করে এবং একইদিনে ঝালকাঠি থানা অবরুদ্ধ করলে পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে অস্ত্র সমর্পন করেন।

অপরদিকে একই দিন সকালে নলছিটি থানার তৎকালীন পুলিশ কর্মকর্তারা নলছিটির মুক্তিযোদ্ধা সেকান্দার আলী মিয়ার কাছে অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করে। তবে এর আগে ৭ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা থানাটি ঘেরাও করে রাখে।

এদিকে জেলায় বহু বধ্যভূমি ও গণকবর হলেও যেগুলো অবহেলায় এখনো পড়ে রয়েছে। সেগুলোকে সরকারিভাবে সংরক্ষণের দাবি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের।

বাংলাদেশ সময়: ০৪০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৭
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।