ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সুন্দরবনের যাত্রা কিন্তু সুন্দর হলো না

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৭
সুন্দরবনের যাত্রা কিন্তু সুন্দর হলো না সুন্দরবন লঞ্চ-২

চরগরবদী (পটুয়াখালী) থেকে: সুন্দরবন-২ এর যাত্রা কিন্তু এতো সুন্দর হলো না। সদরঘাট ছাড়ার পরই আঁচ করা যাচ্ছিলো, যখন পাশ দিয়ে অন্য লঞ্চগুলো হুসহুস করে পেছনে ফেলে যাচ্ছিলো।

প্রথমে সুন্দরবনের ধীরগতি নিয়ে অনেকে নানা রকম মন্তব্য করছিলেন। কেউ বলছিলেন, ধীরে গেলে তেল খরচ কম হয়।

তেল বাঁচাতে লঞ্চ ধীরে চালাচ্ছে। রিজার্ভ করলে এরা এমন দুষ্টুমি করে। লঞ্চ তখন মুক্তারপুর ব্রিজ ক্রস করছিলো।

বিষয়টি নিয়ে যখন ব্যাপক আলোচনা চলছে, আমাদের ট্যুরের দায়িত্বে থাকা বিদ্যুৎ উন্নয়ণ বোর্ডের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক সাইফুল হাসান চৌধুরী অনুরোধ করলেন স্বাভাবিক গতিতে চলার জন্য।  

এবার পাওয়া গেলো আসল খবর। সুপারভাইজার কামাল মিয়া জানালেন, আমাদের লঞ্চের হর্স পাওয়ার কম, যারা জোরে যাচ্ছে ওদের হর্স পাওয়ার বেশি। এই লঞ্চ এর চেয়ে বেশি জোরে যেতে পারবে না।

বেলুন চুপসে গেলে যেমন হয় সবার অবস্থা হলো তেমনি। এবার সুন্দরবন লঞ্চের চটকদার বিজ্ঞাপন নিয়ে হাসি তামাশা শুরু হয়ে গেলো। তবে কেউ কেউ বললেন সুন্দরবনের কিছু বড় লঞ্চ রয়েছে, সেগুলো অনেক ভালো।  

এরপর সুপারভাইজার কামাল জানালেন, সুন্দরবন-২ লঞ্চটি কিন্তু এখন আর মূল কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় নেই। এই লঞ্চটি কিনে নিয়েছেন নুরজাহান শিপিং লাইনের মালিক কামরুল ইসলাম। লঞ্চটি এখন ঢাকা-বরগুনা রুটে চলাচল করে। অনেকদিন বিকল ছিলো মেরামত করে সদ্য নামানো হয়েছে।

নুরজাহান শিপিং লাইন ঢাকা থেকে এই একটি লঞ্চ পরিচালিত করে। কোম্পানিটি সুরভী-১ নামে বরিশাল -বরগুনা রুটে, এমভি ইমা ও এমএল বিসমিল্লাহ্ ভোলা বরিশাল রুটে চলাচল করে।

এরপর ধিকধিক করে এগিয়ে চলছিলো সুন্দরবন-২। কিন্তু ভোররাতে বাকেরগঞ্জের কাছে গিয়ে দেখা দিলো ভয়াবহ বিপত্তি। হঠাৎ ঝাকুনি দিয়ে থেমে গেলো লঞ্চটি। রুম থেকে বের হয়ে দেখা গেলো লঞ্চটি একটি ধানক্ষেতে উঠে গেছে। এরপর দীর্ঘক্ষণ কোনো নড়াচড়া নেই।  

লঞ্চের মাস্টার, চালক ও সারেংয়ের লা জবাব। চালককে থেমে থাকার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি কিছু জানাতে অস্বীকৃতি জানালেন। প্রায় ঘণ্টা খানেক পরে সুপারভাইজার জানালেন পাখা ভেঙ্গে গেছে, মেরামতের চেষ্টা চলছে। কতক্ষণ সময় লাগবে সে বিষয়ে ধারনা দিতে পারলেন না।  

প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর আবার চলতে শুরু করলে, এবার  গতি স্যালোচালিত নৌকার থেকেও কম। সকাল ৯টায় গিয়ে চরগরবদী গিয়ে থেমে গেলো। অথচ এই সময়ের আগেই পায়রা বন্দরে ভেড়ার কথা ছিলো।

সারেং জানালেন এই লঞ্চ আর টেনে নেওয়া সম্ভব না। পরে ৫০ জনের সাংবাদিক টিমটি নেমে পড়লেন। পরে পটুয়াখালী থেকে বাস এনে পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে অসমাপ্ত যাত্রা শুরু হয় বেলা সোয়া ১১টায়। প্রায় তিন ঘণ্টার পথ। এ নিয়ে যাত্রীদের খুব ক্ষোভ।  

**ঢাকার বাইরে গিয়ে গোধূলিলগ্ন উপভোগ

বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৭
এসআই/বিএস 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।