ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভাঙা সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল হাজারো মানুষের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৭
ভাঙা সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল হাজারো মানুষের ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) থেকে ফিরে: সুনামগঞ্জ-দোয়ারাবাজর-ছাতক ৩২ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা দেখার যেন কেউ নেই। রাস্তার ঢালাই ওঠে মাটির রাস্তায় পরিণত হয়েছে।

এমন বেহাল দশার রাস্তা দিয়ে যেতে চান না অনেক অটোরিকশা চালক। তারা রাস্তা বদল করে অন্য রাস্তায় চলাচল করছেন।

ফলে দুর্ভোগ বেড়েছে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা লোকজনের।

সুনামগঞ্জ শহর থেকে ছাতক অথবা দোয়ারাবাজার উপজেলায় একবার যাত্রী নিয়ে গেলে তার অর্ধেক টাকা ব্যয় করতে হয় গাড়ি মেরামতে। তাই রুট পাল্টে ফেলেছেন অনেক চালক।

যারা এ রাস্তায় যান তারা যাত্রীদের কাছে বেশি ভাড়া দাবি করেন। এ নিয়ে যাত্রী-চালকদের মধ্যে চলে বাক-বিতণ্ডা। ইতোমধ্যেই পাঁচ থেকে ১০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালকরা।

সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাধীন সড়কটি দুই থেকে তিন বছর ধরে এভাবেই ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে।

এ সড়ক দিয়ে দোয়ারাবাজার উপজেলার মান্নারগাঁও, পাণ্ডারগাঁও, দোহালিয়া ইউনিয়ন দিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা শহর থেকে ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় প্রতিদিন যাতায়াত করেন প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজার মানুষ।

আর প্রতিদিন জীবিকা অথবা যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে এ ভাঙাচোরা সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হয় নিরুপায় অসহায় সাধারণ মানুষদের।

কিছুদিন আগে মেরামত কাজ করা হলেও দুই-একদিন পর তা বন্ধ হয়ে যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, গালা ও বিটুমিন দিয়ে তৈরি এ সড়কটি বর্তমানে বড় বড় খানা খন্দে চলাচলের একবারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি হলে ছোট-বড় দুর্ঘটনাও ঘটে থাকে। বিশেষ করে অসুস্থ মানুষকে বেশি বিপাকে পড়তে হয় এ সড়কে চলাচল করতে হলে।

কথা হয় দোয়ারাবাজর উপজেলার বাসিন্দা মো.আব্দুল আজিজের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ভাই এ সড়কের কথা বলে কোনো লাভ নেই। ভাঙা সড়ক দিয়ে যাতায়াত করছি অনেকদিন ধরে। সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই।

আমার মনে হয় বাংলাদেশের বাইরে বসবাস করি। আমাদের এ সড়কটি মেরামত কবে হবে আল্লাহ জানেন। আমরা কথা বলতে বলতে চুপসে গেছি।

মান্নারগাঁও ইউনিয়নের বাসিন্দা জুনাব আলী বাংলানিউজকে বলেন, এ সড়কটি মেরামতের জন্য আমরা অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। বহু জায়গায় গিয়ে তদবির করেছি। কারো কোনো খবর নেই। জনপ্রতিনিধি থেকে প্রশাসন সবাই ভাঙা সড়কের ব্যাপারে জানেন কিন্তু কেন জানি মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেই।

এ ব্যাপারে মান্নারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ইইপ) মো.আবু হেনা আজিজ বাংলানিউজকে বলেন, কি বলবো আমি আপনাকে চেয়ারম্যান হয়ে বিপদে আছি। মানুষ মনে করে ইউপি থেকে এ সড়ক মেরামত করার কথা। আমি করছি না। কিন্তু এটি যে সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে তারা এটা বুঝে না।

মেরামত করার জন্য আমাকে বলে। পরে আমি মানুষকে নিয়ে মানববন্ধন করেছি সড়ক মেরামতের দাবিতে। উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেলা প্রশাসন সড়ক বিভাগসহ সবাইকে অবগত করেছি। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না।

সড়কটি মেরামতের ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নিবার্হী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এ সড়ক নষ্ট হয়েছে আমরা জেনেছি। তবে এ সড়কের কাজ জেলা সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প (দ্বিতীয়) পর্যায় সিলেট জোনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সে কারণে এ সড়কের সংস্কার কাজ আমরা করতে পারছি না। তবে চলাচলের জন্য সাময়িক কিছু কাজ  এক সপ্তাহের মধ্যে শুরু করা হবে। সেটি হলে কিছুটা হলেও চলাচলের উপযোগী হবে সড়কটি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৭
আরবি/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।