যানজটের ভোগান্তি থেকে রেহাই পেতে অনেকেই রিকশা, ভ্যানসহ ছোট ছোট পরিবহনে নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন। তবে যাত্রীদের গুণতে হচ্ছে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে চার-পাঁচ গুণ বেশি।
ঢাকামুখী যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপ থাকায় তাদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। এতে সচ্ছল পরিবারের লোকজনের অসুবিধা না হলেও বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। প্রচণ্ড কুয়াশা আর কনকনে শীত উপেক্ষা করে পায়ে হেঁটে অনেকেই একটু কম ভাড়ায় যাওয়ার উপায় খুঁজছেন।
মাকসুদা নামে এক যাত্রী জানান, ছোট বোন রোজিনা আক্তার সাভারের বাইপাইল এলাকার একটি গার্মেন্টস কর্মী। হঠাৎ করে সে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তার কাছে যাওয়ার জন্যে রওয়ানা হয়েছেন মাকসুদা। এজন্য পাটুরিয়া ফেরিঘাটের ৪ নম্বর ঘাটের পন্টুন থেকে ৫/১০ টাকার রিকশা ভাড়া গুণতে হয়েছে ৩০ টাকা। আবার সাভারের নবীনগরের লোকাল বাসের ভাড়া ৫০ টাকা হলেও এখন তাকে গুণতে হচ্ছে ১৫০ টাকা।
সরেজমিনে শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে পাটুরিয়া ফেরিঘাটের বাস টার্মিনালেও বাসের হেলপারদের এমন হাঁকডাক শুনতে পাওয়া যায়। নবীনগর উঠলেই দেড়শো টাকা। অনেকে হাঁকডাক দিচ্ছেন- সাভার ২০০ টাকা। অনেকেই আবার যাত্রীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলছেন, যেখানেই নামেন উঠলেই দুইশো।
ঘন কুয়াশার কারণে বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১১টা থেকে শুক্রবার সকাল পৌনে ১১টা পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। এতে করেই মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় এমন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
অপরদিকে যাত্রী ভোগান্তির বিষয়টি বিবেচনা করে যাত্রীবাহী বাস ও ব্যক্তিগত ছোট গাড়িগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নৌরুট পারাপার করা হলেও বিপাকে পড়েছেন কয়েকশ’ পণ্যবাহী ট্রাকের চালক ও সহযোগীরা। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টের খালি জায়গায় আটকে রাখা হয়েছে তাদের। এছাড়াও পাটুরিয়া ফেরিঘাটের দুইটি ট্রাক টার্মিনালও ট্রাকে টইটুম্বুর রয়েছে।
পাটুরিয়া ফেরিঘাটের দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে জানান, পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় সবশেষ প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত বাস ও জরুরি পণ্যবাহী ট্রাকের লাইন রয়েছে। এগুলো পারাপার করার পরে আটকে থাকা ট্রাকগুলোকে সিরিয়াল অনুযায়ী পারাপার করা হবে।
যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার বিষয়টি জানা নেই বলে মন্তব্য করেন ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আনোয়ার।
পাটুরিয়া ফেরিঘাটের বাণিজ্য বিভাগের ব্যবস্থাপক সালাউদ্দিন হোসেন জানান, পাটুরিয়া দৌলতদিয়া নৌরুটে যানবাহন ও যাত্রী পারাপারে ছোট বড় মিলে ১৭টি ফেরি চলাচল করছে। রাতে কুয়াশার ঘনত্ব বেশি না থাকলে দ্রুত সময়েই বাসগুলো নৌরুট পারাপার শেষ হয়ে যাবে বলেও মনে করেন তিনি।
ভোগান্তি কমেনি পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায়
বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৭
এমজেএফ