ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত রাজশাহী, শীতজনিত রোগের প্রকোপ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০১৮
শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত রাজশাহী, শীতজনিত রোগের প্রকোপ শীতে আগুন পোহাচ্ছে ছিন্নমূল মানুষ/ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: রাজশাহী অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে চলা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেও কমেনি শীতের দাপট। উত্তরের হিমেল হাওয়ায় কাবু পদ্মাপাড়ের ছিন্নমূল মানুষ। তীব্র শীতে মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে কোল্ড ডায়রিয়া। এ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বাড়ছে নিউমোনিয়া, সর্দি-কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।

বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) থেকে এ অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গতকাল রাজশাহীতে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

শুক্রবার সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস আর ঘন কুয়াশায় শীতের দাপট কমেনি।  

হিমালয় ছুঁয়ে আসা হিম বাতাস কাঁপিয়ে তুলেছে উত্তরের জনপদের মানুষগুলোকে। বিশেষ করে পথের ছিন্নমূল মানুষগুলোর সীমাহীন দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। হঠাৎ করেই শীত জেঁকে বসায় নিদারুণ কষ্টে দিন-রাত কাটছে তাদের। দুপুরে সূর্যের সোনালি রোদও বেশিক্ষণ উষ্ণতা ছড়াতে পারছে না শীতার্ত মানুগুলোর শরীরে।

সকালে পথের ধারে খড়-কুটোয় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে তাদের। আর নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা শীত নিবারণের জন্য কম দামে শীতবস্ত্র কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন মহানগরীর বিভিন্ন ফুটপাতে গড়ে ওঠা ভাসমান দোকানগুলোতে। চলতি সপ্তাহে সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়েছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম বলে জানিয়েছেন শীতার্তরা।  

মহানগীর ভদ্রা রেলওয়ে বস্তির নাজমা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, শুক্রবার সকালে একদল যুবক কম্বল নিয়ে এসেছিল। কিন্তু লোক বেশি থাকায় অনেকেই তা পায়নি। যাওয়ার সময় জানিয়ে গেছে তারা অবার আসবে। এরপর কেউ আসেনি।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আসাদুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, হঠাৎ ঠাণ্ডা বাড়ায় শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এর মধ্যে শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তির সংখ্যাই বেশি। আক্রান্তদের অনেকেই কোল্ড ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, হৃদরোগ নিয়ে হাসপাতালে আসছেন।  

শীতে বেড়েছে শিশু ও বয়স্কদের শীতজনিত রোগরাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত আবহাওয়া কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বাংলানিউজকে জানান, রাজশাহীতে গতকাল থেকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। সাধারণত তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলেই তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। এর মধ্য বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) রেকর্ড করা হয় ০৮ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর শুক্রবার (০৫ জানুয়ারি) রেকর্ড করা হয়েছে ০৮ দশমিক ০৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাই মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে।  

এক প্রশ্নের জবাবে আশরাফুল আলম বলেন, তাপমাত্রার কমে আসায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। তাপমাত্রা সাধারণত ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে মৃদু, ৮ ডিগ্রি সেসিয়াসের নিচে নামলে মাঝারি এবং ৬ ডিগ্রির নিচে নামলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, চলতি সপ্তাহে রাজশাহীসহ দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের ওপর দিয়ে দুই থেকে তিনটি মৃদু ও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। আর রাজশাহীর ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সময় এই অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ থেকে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসতে পরে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন এই আবহাওয়া কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০১৮
এসএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।