ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ক্যান্সারে আক্রান্ত কলেজ ছাত্রী মনিকার বাঁচার আকুতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৮
ক্যান্সারে আক্রান্ত কলেজ ছাত্রী মনিকার বাঁচার আকুতি হাসপাতালের বিছানায় চিকিৎসকদের সঙ্গে মনিক

খুলনা: মরণব্যাধি ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত কলেজ ছাত্রী মনিকা ইসলাম। তারুণ্যের উচ্ছ্বলতার পরিবর্তে মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে ১৯ বছর বয়সী মনিকা। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মা-বাবার মলিন বিষণ্ন মুখের দিকে চেয়ে থাকাই যেন এখন তার কাজ।

দরিদ্র বাবা তার সারা জীবনের সঞ্চয় যা কিছু ছিলো সবই মেয়ের চিকিৎসায় খরচ করে ফেলেছেন। আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ধার করেছেন, সাহায্য নিয়েছেন।

২০১৬ সালে একদিন সকালে হঠাৎ ডান পায়ে প্রচণ্ড ব্যাথা অনুভব করে মনিকা। নিয়ে যাওয়া হলো ডাক্তারের কাছে। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে খুলনার ডাক্তাররা সিদ্ধান্ত দিলেন ঢাকায় পাঠানোর। ধরা পড়লো প্রাণঘাতী অ্যাকিউট মাইলয়েড লিউকেমিয়া (এএমএল) ক্যাটাগরির ব্লাড ক্যান্সার। পরিবারের লোকজন ঢাকায় এনে ভর্তি করলেন মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতালে। শুরু হলো চিকিৎসা। টানা ছয় মাস কাটাতে হলো হাসপাতালের বিছানায়। মনিকা কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠলো। দায়িত্বরত ডাক্তার বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি দিলেন। ২০১৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় আর অংশগ্রহণ করা হলো না। খুলনার বাড়িতে গিয়ে মনিকা তখন অনেকটাই সুস্থ।  

এবার ২০১৭ সালের এইচএসসি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করলো। ওই বছরের নভেম্বরে আবারো অসুস্থ হয়ে পড়লো মনিকা। ফের নিয়ে যাওয়া হলো ঢাকার ক্যান্সার হাসপাতালে। দ্বিতীয়বার আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লো। চিকিৎসায়ও মনিকার কোনো উন্নতি হচ্ছে না। দিন দিন বেঁচে থাকার আশাটুকুও হারিয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মনিকার সম্পূর্ণ সুস্থ হতে হলে এদেশে আর কিছুই করার নেই। নিয়ে যেতে হবে দেশের বাইরে।  
  
খুলনার দিঘুলিয়া উপজেলার চন্দনীমহল গ্রামের মেয়ে মনিকা। স্টার জুট মিলসের ছোট এক স্টাফ ক্যান্টিন চালিয়ে পাঁচজনের সংসার চালান মনিকার বাবা মনিরুল ইসলাম। এক মেয়ে এবার উচ্চ মাধ্যমিকে আর ছেলে পড়ছে ষষ্ঠ শ্রেণিতে। মেয়ের চিকিৎসার জন্য নিজের সর্বস্ব খুইয়ে, ধারদেনা করে আর মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন।  

মনিকার বাবা মনিরুল জানান, মনিকা ইসলাম বর্তমানে ওই হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. মাহাবুবুর রহমানের অধীনে চিকিৎসাধীন। ৮১৬/বি কেবিনে ভর্তি মনিকা। ডা. মাহাবুবুর রহমান জানান, মনিকাকে বাঁচানোর একমাত্র উপায় অ্যালোজেনিক বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন, যা এখনো বাংলাদেশে চালু হয়নি। ফলে তাকে দেশের বাইরে নিয়ে যেতে হবে। আর এ চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল। খরচ হবে বাংলাদেশি টাকায় কমপক্ষে এক কোটি টাকা।  

খুলনার আলহাজ সরোয়ার খান ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ এ এস এম সাইফুদ্দোহা জানান, মনিকা সহপাঠীদের মধ্যে অন্যতম মেধাবী। মেয়েটিকে বাঁচাতে না পারা আমাদের জন্য কষ্টের ব্যাপার হবে।

তিনি সমাজের বিত্তবানসব দেশবাসীর কাছে মনিকাকে বাঁচাতে সাহায্যের জন্য অনুরোধ করেন।

নিঃস্ব মনিরুল আর মেয়ের চিকিৎসার খরচ চালাতে পারছেন না। নিরুপায় মনিরুল সমাজের বিত্তবানদের কাছে মেয়েকে বাঁচাতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আকুতি জানিয়েছেন।  

মনিকার জন্য সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা: শেখ মনিরুল ইসলাম, ব্যাংক হিসাব নম্বর: ১২০১৫১১৩৩১৩, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, খুলনা শাখা, ফোন: বাবা-০১৭১১৪৫০১৯৫ (বিকাশ), মা- ০১৭১১৩০৯০৭৪ (বিকাশ)।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৮
এমআরএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।