ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রূপা ধর্ষণ-হত্যা: আরো ৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৮
রূপা ধর্ষণ-হত্যা: আরো ৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে ঢাকার আইডিয়াল ‘ল’ কলেজের শিক্ষার্থী রূপা খাতুনকে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাইয়ুম খান সিদ্দিকীসহ আরো তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।

রোববার (২১ জানুয়ারি) তারা আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

অন্য দুইজন হলেন, রূপা যে বাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন সেই ছোঁয়া পরিবহনের মালিক আমেনা খাতুনের স্বামী মো. আখতারুজ্জামান এবং ছেলে সাব্বির হোসেন।

টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থাকা প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনসুর মিয়ার আদালতে দুপুর সোয়া ১২টা থেকে একটা পর্যন্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাক্ষ্য দেন। এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন ও শামীম চৌধুরী তাকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত জেরা করেন। পরে আদালত এক ঘণ্টার জন্য মুলতবি করা হয়।

পরে আবার বিকেল তিনটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত তাকে জেরা করা হয়। আদালতের সময় শেষ হয়ে গেলে মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) পুনরায় জেরার দিন ধার্য করা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তার আগে বাসের মালিক আমেনা খাতুনের স্বামী মো. আখতারুজ্জামান ও ছেলে সাব্বির হোসেন সাক্ষী দেন। আমেনা খাতুন ছোঁয়া পরিবহনের চালক, সুপারভাইজারসহ পাঁচ শ্রমিকের বিষয়ে যে প্রত্যায়নপত্র দিয়েছিলেন আখতারুজ্জামান ও সাব্বির তা সত্যায়িত করেন। উল্লেখ্য, এ ঘটনার পর ছোঁয়া পরিবহনের মালিক আমেনা খাতুন মৃত্যুবরণ করেছেন।

এ নিয়ে চাঞ্চল্যকর এই মামলার ২৭জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হলো। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ কৌসুলি একেএম নাছিমুল আক্তার জানান, আগামী তদন্তকারী কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়েই এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব শেষ হবে। এর পর উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে।
গত ৩ জানুয়ারি মামলার বাদী মধুপুরের অরণখোলা ফাঁড়ির উপ পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলামের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে চাঞ্চল্যকর এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রূপা খাতুনকে চলন্ত বাসে গণধর্ষণ করে পরিবহন শ্রমিকরা। পরে তাকে হত্যা করে টাঙ্গাইলের মধুপুর বন এলাকায় ফেলে রেখে যায়। পুলিশ ওই রাতেই তার মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্ত শেষে পরদিন বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় অরণখোলা পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে মধুপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।

২৮ আগস্ট রূপার ভাই মধুপুর থানায় এসে মরদেহের ছবি দেখে রূপাকে শনাক্ত করেন। পরে পুলিশ ছোঁয়া পরিবহনের চালক হাবিবুর (৪৫), সুপারভাইজার সফর আলী (৫৫), সহকারী শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীরকে (১৯) গ্রেফতার করে। পুলিশের কাছে তারা রূপাকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে। ২৯ আগস্ট বাসের তিন সহকারী শামীম, আকরাম, জাহাঙ্গীর এবং ৩০ আগস্ট চালক হাবিবুর এবং সুপারভাইজার সফর আলী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তারা সবাই এখন টাঙ্গাইল কারাগারে আছে। ৩১ আগস্ট রূপার মরদেহ উত্তোলন করে তার ভাইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে তাকে সিরাজগঞ্জের তারাশ উপজেলার নিজ গ্রাম আসানবাড়িতে দাফন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৮ ঘণ্টা, ২১ জানুয়ারি, ২০১৮
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।