ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ছাত্রলীগ-নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে আহত ৫০

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৮
ছাত্রলীগ-নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে আহত ৫০

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ ও নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে এ ঘটনা ঘটে।  

অধিভুক্ত সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার বিচার দাবি করে নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আন্দোলন শুরু হয়।

যেখানে ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফেডারেশন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতাকর্মীরা অংশ নেয়।
 
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি হলো- আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে করা অজ্ঞাতনামা মামলা প্রত্যাহার করা, অধিভুক্ত বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা যৌন নিপীড়নকারী ছাত্রলীগ নেতাদের বহিষ্কার, দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানীর পদত্যাগ এবং সাত কলেজ সংকটের নিরসন।
 
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শেষ হলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করার কর্মসূচি দেয়। প্রশাসনিক ভবনের তিনটি ফটকের তালা ভেঙে তারা উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে ফেলে। উপাচার্য বের হতে চাইলে চারদিকে থেকে ঘিরে ধরে তারা। নিজেদের দাবিতে অনড় থাকে আন্দোলনকারীরা। এ সময় ঘটনাস্থলে আসেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন, বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি আবিদ আল হাসান। তারা নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনকারীদের থেকে উদ্ধার করে উপাচার্যকে তার কার্যালয়ে পৌঁছে দেয়। এসময় আন্দোলনকারীরা ছাত্রলীগ নেতাদেরও ধাওয়া দেয়। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জানের গায়েও হাত তুলে মৃৎশিল্প বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তানভীর হোসাইন মঈন।
 
এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতারা উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে এবং আন্দোলনকারীরা কার্যালয়ের পিছনে অবস্থান নেয়। বিকেল সোয়া ৪টার দিকে কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেওয়া আন্দোলনকারীদের এলোপাতাড়ি রড দিয়ে পেটায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় বেশ কয়েকজন আহত হন। পরে ছাত্রলীগ বিভিন্ন হল থেকে নেতাকর্মীদের ডেকে আনে। এক পর্যায়ে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঘেরাও করা হয় প্রশাসনিক ভবনের চারদিক। এ সময় প্রশাসনিক ভবনের পূর্ব গেইট (সোনালী ব্যাংকের সামনে) দিয়ে চলে যেতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতাদের হামলার শিকার হন নিপীড়ন বিরোধীরা। এতে সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের প্রায় অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয় বলে জানা গেছে।
 
হামলায় গুরুতর আহতরা হলেন- ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র মাসুদ আল মাহাদী, আবু রায়হান খান, রাজীব দাস, ছাত্র ফেডারেশনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের প্রগতি বর্মন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সহ-সভাপতি মীর আরশাদুল হক। এছাড়াও ছাত্রলীগ নেতাদের হামলার শিকার হন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক। ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেলের ক্যামেরা। এরপর সেখান থেকে পালিয়ে যেতে চাইলে প্রশাসনিক ভবনের বিভিন্ন জায়গা থেকে ধরে-ধরে মারা হয় আন্দোলনকারীদের। বিকেল ৫টার দিকে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রেণে আসে।
 
এ ঘটনার পর মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলনকারীদের বিচার দাবি করেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, আন্দোলনের নামে এখানে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যমূলক কার্যক্রম ঘটানো হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদেরহানি ঘটানোর চেষ্টা হচ্ছে। আমাদের মনে হয় এটি পূর্ব পরিকল্পিত।

বাংলাদেশ সময়: ০০৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৮
এসকেবি/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।