ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আর্সেনিক ঝুঁকিতে তালার দেড় লক্ষাধিক মানুষ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০১৮
আর্সেনিক ঝুঁকিতে তালার দেড় লক্ষাধিক মানুষ আর্সেনিকে আক্রান্ত রোগীরা। ছবি: বাংলানিউজ

সাতক্ষীরা: সুপেয় খাবার পানির সংকটে মারাত্মক আর্সেনিক ঝুঁকিতে পড়েছে সাতক্ষীরার তালা উপজেলাবাসী। আর্সেনিকযুক্ত পানি পানের কারণে গত ১৫ বছরে একই পরিবারের চারজনসহ অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। 

বিষয়টি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর অস্বীকার না করলেও এ মুহূর্তে দপ্তরটিতে এ সংক্রান্ত কোনো প্রকৃত পরিসংখ্যান নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তালা উপজেলার কৃষ্ণকাটি গ্রামের জালাল মোড়ল দীর্ঘদিন ধরে আর্সেনিক রোগে আক্রান্ত।

যা বর্তমানে ক্যান্সারে রূপান্তর হয়েছে। তার ফুফু শরভানু বিবি, বাবা আনসার মোড়ল, বড় ভাই আলাউদ্দীন মোড়ল ও ভাই সালাউদ্দীন মোড়লসহ গত ১৫ বছরে অন্তত ১৩ জন এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তার পরিবারের অন্য সদস্যরাও আর্সেনিকে আক্রান্ত।  

একই সঙ্গে ওই গ্রামের তিন শতাধিক মানুষ ভয়াবহ আর্সেনিক ঝুঁকিতে রয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি। এছাড়া তালা উপজেলার তালা সদর, খেশরা, খলিশখালী ও জালালপুর ইউনিয়নে আর্সেনিকযুক্ত টিউবওয়েলের সংখ্যা সর্বাধিক বলে জানা গেছে। সবমিলিয়ে উপজেলার দেড় লক্ষাধিক মানুষ রয়েছে আর্সেনিক ঝুঁকিতে।  

কৃষ্ণকাটি গ্রামের সাজেদা বেগম বাংলানিউজকে জানান, তিনি নিজেই আর্সেনিক রোগে আক্রান্ত। তার বিয়ের পর স্বামীর বাড়ির লোকজন যখন জানতে পারেন সে আর্সেনিকে আক্রান্ত, তখন তাকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।  

তিনি আরো জানান, তাদের এলাকার আলাউদ্দিন, সালউদ্দিন, মুনছুর রহমান মোড়ল, শাহানারা বেগম, শরুপজান বিবি, সোনাবান বিবি, সোহরাব মোড়ল, ইয়াছিন মোড়ল, সরবানু বিবি, ছবেদ মোড়ল, ফকির মোড়ল ও জবেদ আলী মোড়লসহ অনেকেই আর্সেনিক রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।

তালার জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম মফিদুল হক লিটু বাংলানিউজকে জানান, কৃষ্ণকাটি গ্রামে একই পরিবারের চারজনসহ অনেকেই আর্সেনিক রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রাজীব সরদার বাংলানিউজকে বলেন, শুনেছি এই এলাকায় আর্সেনিকের প্রকোপ রয়েছে। কিন্তু সচরাচার কেউ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন না। ডায়াগনসিসের মাধ্যমে আর্সেনিকের চিকিৎসা না করালে তা ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে। একবার কোন মানুষের শরীরে আর্সেনিক হলে তা আস্তে আস্তে সারা শরীরে চকচক দাগ হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। ভাল হওয়ার লক্ষণ খুবই কম থাকে।

তালা উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে কৃষ্ণকাটি গ্রাম পরিদর্শন করেছি। আগামী সপ্তাহে আরো একটি টিম ওই এলাকা পরিদর্শন করবে। ওই টিমের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আর্সেনিক ঝুঁকি কমাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১৮
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।