ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

চিনি বিক্রি নেই, তাই বেতন-ভাতাও বন্ধ

শাহিদুল ইসলাম সবুজ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৮
চিনি বিক্রি নেই, তাই বেতন-ভাতাও বন্ধ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

জয়পুরহাট: জয়পুরহাট চিনিকলের ফোরম্যান রফিকুল ইসলাম, অপারেটর ইদ্রিস আলী, সহকারী জোবায়ের হোসেন,
ফিডার মোজাম্মেল হক, গোডাউন কিপার রাজু আহম্মেদ জয়পুরহাট চিনিকলের নিয়মিত শ্রমিক। তারা চলতি মাস সহ ৪ মাস ধরে বেতন ভাতা না পেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকটাই মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।

শুধু রফিকুল, ইদ্রিস, জোবায়েরই নয় এমন অবস্থার শিকার হয়েছেন এ চিনিকলের অন্তত আরো ৪শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী। তারা জানান, টাকা না থাকায় দোকানীরা তাদের বাকিতে চাল-ডাল দিচ্ছে না।

অন্যদিকে প্রাইভেট শিক্ষকরা তাদের সন্তানদের পড়ানোও বন্ধ করে দিয়েছে। উপায় না পেয়ে অনেকেই চড়া সুদে ঋণ নিয়ে সংসার চালাতে বাধ্য হচ্ছেন বলেও জানান তারা।

জানা যায়, ২১৭ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত জয়পুরহাট চিনিকলটি প্রথম আখ মাড়াই শুরু করে ১৯৬২-৬৩ মৌসুমে। গত মৌসুমের উৎপাদিত ১ হাজার ৫শ মেট্রিক টন চিনি এবং ৩ হাজার ৫শ মেট্রিক টন চিটাগুড় এখনো বিক্রি না হওয়ায় এমন সমস্যা দেখা দিয়েছে।
চিনিকলটির প্রশাসন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত মৌসুমের উৎপাদিত সাড়ে ৭ কোটি টাকা মুল্যের ১ হাজার ৫০০
মেট্রিক টন চিনি এবং ৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা মূল্যের ৩ হাজার ৫শ মেট্রিক টন চিটাগুড় এখনো রয়েছে অবিক্রিত। আর এ কারণেই শ্রমিক কর্মচারী-কর্মকর্তার বেতন ভাতা বকেয়া রয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকার মতো।

দীর্ঘ দিন ধরে বেতন-ভাতা না পেয়ে শ্রমিকদের মাঝে এখন অসন্তোষ বিরাজ করছে। যে কারনে তারা চিনিকল চত্তরে একাধিক দিন বিক্ষোভ মিছিল করতে বাধ্য হয়েছে। তবে এরই মাঝে বৃহস্পতিবার (৮ নভেম্বর) মিল কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের ১ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করেছে বলে জানা গেছে।

জয়পুরহাট চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো: আলী আকতার জানান, বিগ কয়েক বছরের মতো এ
বছরও শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। যে কারণে শ্রমিকরা মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। আমরা আশা করবো আগামীতে এ সংকট কাটাতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করবে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন।

এ বিষয়ে জয়পুরহাট চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোস্তফা কামাল বাংলানিউজকে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে
দেশের প্রাইভেট চিনিকলগুলো ‘র সুগার’ প্রস্তুত করে কম মূল্যে বাজারজাত করছে। আর আমাদের রাষ্ট্রায়ত্ব চিনিকলে
সরাসরি আখ থেকে চিনি আহরণ করার কারনে উৎপাদন খরচ বেশী পড়ছে। ক্রেতারা কম মূল্যের চিনির দিকে ঝুকে পড়ায় আমাদের চিনিগুলো অবিক্রিত থেকে যাচ্ছে। যে কারণে নির্দিষ্ট সময়ে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছি। তবে এটি সমাধানে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন কাজ শুরু করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৫২ ঘন্টা, ১৫ নভেম্বর, ২০১৮
এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।