ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মনিটরিং করে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়: কৃষিমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০১৯
মনিটরিং করে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়: কৃষিমন্ত্রী

ঢাকা: আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, র‍্যাব-পুলিশ বা মনিটরিং করে কোনোদিনই বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। বাজার মূলত চাহিদা ও সরবরাহের ওপর নির্ভর করে। যোগান বা সরবরাহ বেশি হলে কিছু করা লাগবে না, এমনিতেই পণ্যের দাম কমে যাবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। 

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সারের মূল্য হ্রাস নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী।  

নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম বাড়ছে, সরকার কী বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না, সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমি সবসময় বলি কাঁচাবাজারের সব পণ্যই পচনশীল।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, পুলিশ বা র‍্যাব দিয়ে অভিযান চালিয়ে আপনি কোনোদিনই বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। বাজারের যে শক্তি সেটাই এটাকে নিয়ন্ত্রণ করবে। বাজার মনিটর করার জন্য সব দেশেই কমিটি রয়েছে। কিন্তু তেমনভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এটা নির্ভর করে চাহিদা ও যোগানের ওপর। যোগান বা সরবরাহ বেশি হলে কিছু করা লাগবে না, অটোমেটিক্যালি দাম কমে যাবে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়, কিন্তু সম্প্রতি লবণের দাম বৃদ্ধির ব্যাপারটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়েই নিয়ন্ত্রণ করা গেছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, লবণের বিষয়টা ছিল গুজব। তাই সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা গেছে। চাহিদার তুলনায় লবণ বেশি আছে তাই সম্ভব হয়েছে। আমি বলেছি, শুধু বাজার মনিটর করে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। তারপরও বাজারতো মনিটর করতেই হবে। কিছু ভুলতো আমাদের রয়েছেই। যখন আমাদের পেঁয়াজ পচে গেলো তখনই তো আমাদের উচিত ছিল বেশি বেশি পেঁয়াজ আমদানি করা।

পেঁয়াজ ছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যর দামই বাড়ছে, এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া খুব কঠিন। সব জিনিসের দাম বেড়েছে এটা ঠিক না। ভোজ্যতেলের দাম বাড়েনি, সব কিছুই সহনশীল পর্যায়ে রয়েছে পেঁয়াজটাই অসহনশীল পর্যায়ে গেছে। কোনোভাবেই এ দাম গ্রহণযোগ্য নয়।

নিজে ২৫০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ কেনেন কিনা জানতে চাইলে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কম কেনা হয়। আগে যে রকম কিনতাম এখন ওতোটা কিনি না। আমরা অনেকগুলো পেঁয়াজের ভ্যারাইটি নিয়ে এসেছি। আশা করি আগামীতে আমরা পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারবো। মূল পেঁয়াজ এখনো ওঠেনি। বীজ থেকে লাগানো পেঁয়াজ উঠতে সময় লাগবে। আমাদের উৎপাদন ক্ষমতা আছে, তাতে সংরক্ষণ করতে পারলে ঘাটতি হওয়ার কথা নয়।

সারে ভর্তুকি দেওয়ার পরও কেন কৃষক ফসলের মূল্য পাচ্ছে না, এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, সারের বেনিফিট পুরো কৃষকরা পাবে। বাজারে শাক-সবজির যে দাম বেশি এগুলোর অনেকগুলোর কারণ রয়েছে। পরিবহন খরচ অস্বাভাবিকভাবে বেশি। তাই উৎপাদন খরচ ও ভোক্তাদের ক্রয়ে অনেক পার্থক্য। কিন্তু এখন দামটা অনেক বেশি। তবে আমার মনে হয় খুব দ্রুত দাম কমে আসবে। এটা এমন কমবে যে, চাষিরা বিক্রিই করতে পারবে না, এমন পরিস্থিতি হতে পারে।

চালের বাজার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, খাদ্যমন্ত্রী আমাকে বলেছেন যে, ওএমএস’র গাড়ি থেকে মোটা চাল মানুষ নিতে চায় না। কোনো মানুষ ওএমএসের চাল নেয় না। মোটা চালের দাম এক টাকাও বাড়েনি। আমরা ভিজিএফ’র মাধ্যমে কিছু চাল দিয়ে থাকি। এসব চাল নিয়ে কেউ খায়, কেউ বিক্রি করে দিয়ে চিকন চাল কেনে। এই হলো পরিস্থিতি। চাল যারা কিনতে পারে, তাদের জন্য দাম বাড়লে সমস্যা কী। চালের দাম না বাড়লে তো আবার কৃষক দাম পাবে না। আমরা তো চাচ্ছি যে ধানের দাম বাড়ুক।  
 
ব্রিফিংয়ে উপস্থিত কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান বলেন, আমরা যদি ৩০ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন করতে পারি, তাহলে পেঁয়াজের সমস্যা আর হবে না। আমরা এ লক্ষ্যেই পেঁয়াজের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। ফরিদপুর, মেহেরপুর ও পাবনা এলাকায় পেঁয়াজ বেশি উৎপাদন হয়। আমরা এসব এলাকায় আগামীতে আরও বেশি পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি।

আরও পড়ুন>>> ‘আলু রপ্তানিতে আরও দুই বছর প্রণোদনা দেওয়া উচিত’

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৯
জিসিজি/এইচজে 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।