ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

৬ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় ফেনী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৯
৬ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় ফেনী ফেনী কলেজ অডিটরিয়ামের স্মৃতিস্তম্ভ। ছবি: বাংলানিউজ

ফেনী: ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর হানাদার হয় ফেনী। ১৯৭১ সালের এদিনে মুক্তিসেনারা সম্মুখ যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে ফেনীর মাটিতে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে ছিল।

দিবসটি পালন উপলক্ষে শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে ফেনী জেল রোড়ের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে আলোচনা সভা ও সেখান থেকে ফেনী সরকারি কলেজ বধ্যভূমি পর্যন্ত র‌্যালির আয়োজন করেছে ফেনী জেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ফেনী ইউনিট কমান্ড।

ফেনী জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. ওয়াহিদুজজামানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা ও র‌্যালিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বীর বিক্রম কর্নেল জাফর ইমাম।

উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) নিজাম উদ্দিন হাজারী।

র‌্যালিতে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা, শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহণ করার কথা রয়েছে।

র‌্যালি শেষে ফেনী শহীদ মিনারে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ এবং বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।  ফেনী জেলা প্রশাসন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবদুল মোতালেব বাংলানিউজকে জানান, দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পাকবাহিনী ও রাজাকার-আলবদর বাহিনীর নৃশংস বরর্বতায় ক্ষত-বিক্ষত ফেনী শহরে ৬ ডিসেম্বর বাঙালিরা বিজয়ের নিশান উড়িয়ে স্বজন-হারাদের কান্না ভুলিয়ে দিয়েছিল। সেদিন জেলার বিভিন্ন স্থানে আটটি বধ্যভূমিতে শহীদদের মরদেহ শনাক্ত করতে ছুটে ছিল স্বজন হারা ব্যক্তিরা।

মুক্তিযুদ্ধের এদিনে ফেনী অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর অধিনায়ক ক্যাপ্টেন জাফর ইমাম ও তার বাহিনী পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে অসম সাহসিকতা দেখায়। ভারতের বিলোনীয়া ও তৎসংলগ্ন অঞ্চল থেকে ১০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট একে একে বিলোনিয়া, পরশুরাম, মুন্সিরহাট ও ফুলগাজীকে হানাদার মুক্ত করে। পরে এক পর্যায়ে পাক হানাদার বাহিনী শুভপুর ব্রিজ হয়ে চট্টগ্রামের দিকে পালিয়ে যায়।
 
এদিকে ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক জয়নাল আবদীন ভিপি’র নেতৃত্বে এ অঞ্চলে আরেকটি মুক্তিবাহিনী ছিল বিএলএফ বা মুজিব বাহিনী নামে। তারা দাগনভূঞা, রাজাপুর, সিন্দুরপুর হয়ে হানাদার বাহিনীকে আক্রমণ করতে করতে ফেনী শহরের দিকে এগুতে থাকে। এক পর্যায়ে পাক হানাদাররা ৬ ডিসেম্বর রাতে কুমিল্লার দিকে পালিয়ে যায়। সেসময় ফেনীর অবাঙালি মহকুমা প্রশাসক বেলাল এ খানও পাকবাহিনীর সঙ্গে পালিয়ে যান।

ফেনী হানাদারমুক্ত হওয়ার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রামের সঙ্গে সড়ক ও রেলপথ নিয়ন্ত্রণ মুক্তিবাহিনীর হাতে চলে আসে। এতে পাক বাহিনীর যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হানাদার বাহিনী ফেনী সরকারি কলেজ, তৎকালীন সিও অফিসসহ কয়েকটি স্থানে স্বাধীনতাকামী নিরীহ মানুষকে নির্মমভাবে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করেছিল। সে অমর শহীদদের স্মৃতির ভাস্কর হিসেবে ফেনী কলেজ অডিটরিয়ামের পাশে বধ্যভূমি ও জেল রোডের পাশে বীর শহীদদের নাম সম্বলিত স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৯
এসএইচডি/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।