ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির পরিচয়পত্র পেশ

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১৯
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির পরিচয়পত্র পেশ

ঢাকা: জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেছেন সংগঠনটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের সদর দপ্তরে মহাসচিবের অফিসে তিনি পরিচয়পত্র পেশ করেন।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী অফিস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে বাংলাদেশ।

রাবাব ফাতিমা হচ্ছেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের ১৫তম স্থায়ী প্রতিনিধি। গত ২৯ নভেম্বর স্থায়ী মিশনের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। বর্তমান কর্মস্থলে যোগদানের আগে তিনি জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

পরিচয়পত্র পেশকালে স্থায়ী প্রতিনিধি জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন। এসময় গুতেরেস বাংলাদেশকে জাতিসংঘের বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।  

মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতিসংঘের মর্যাদাপূর্ণ একটি সদস্যরাষ্ট্র হিসেবে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। ’ রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা জাতিসংঘ এবং মহাসচিবের পদক্ষেপ ও প্রচেষ্টাগুলোর প্রতি বাংলাদেশের অব্যাহত প্রতিশ্রুতি ও সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।  

স্পেনের মাদ্রিদে সদ্য সমাপ্ত জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত কপ-২৫ সামিটে অংশগ্রহণকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি উল্লেখ করেন মহাসচিব গুতেরেস। তিনি জলবায়ু পরিবর্তনরোধে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অবদান এবং বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের পেশাদারিত্ব ও অব্যাহত সুনামের কথা গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন মহাসচিব।

রোহিঙ্গা বিষয়ে মহাসচিব ও স্থায়ী প্রতিনিধির মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। এই সমস্যার টেকসই ও দ্রুত সমাধানে সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন মর্মে পূর্ণ নিশ্চয়তা দেন গুতেরেস।  

এসময় ঢাকায় ২০২০ সালের ১৭ মার্চ অনুষ্ঠেয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য মহাসচিবকে আমন্ত্রণ জানান রাবাব। জন্মশতবার্ষিকীর এই অনুষ্ঠান যথাযোগ্য মর্যাদায় বৈশ্বিকভাবে উদযাপন করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ইউনেস্কো কর্তৃক জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদযাপনের বিষয়টি উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, নিউইয়র্কস্থ জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সঙ্গেও জন্মশতবার্ষিকীর কর্মসূচি উদযাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে মহাসচিবের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।

পেশাদার কূটনীতিক রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র সার্ভিসে যোগ দেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি নিউইয়র্ক ও জেনেভাস্থ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এবং কলকাতা ও বেইজিংয়স্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে দায়িত্ব পালন করেন। মানবাধিকার বিষয়ে রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমার রয়েছে ব্যাপক অভিজ্ঞতা।  

লন্ডনে কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটে মানবাধিকার বিভাগের প্রধান এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার আঞ্চলিক প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতাও রয়েছে এই কূটনীতিকের।

পরিচয়পত্র প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- মিশনের উপস্থায়ী প্রতিনিধি মো. আরিফুল ইসলাম, মিনিস্টার মনোয়ার হোসেন, জাতিসংঘের রাজনৈতিক ও শান্তি-বিনির্মাণ বিষয়ের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মিজ রোজম্যারি এ ডিকারলো এবং মহাসচিবের শেফ দ্য ক্যাবিনেট মিজ মারিয়া লুইজা রিবিরিয়ো ভিয়োট্টি প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ১২০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৯
টিআর/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।