ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বানারীপাড়ার ট্রিপল মার্ডার মামলার আলামত উদ্ধার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০১৯
বানারীপাড়ার ট্রিপল মার্ডার মামলার আলামত উদ্ধার উদ্ধার হওয়া আলামত, পাশে আটক জাকির হোসেন ও জুয়েল। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: বরিশালের বানারীপাড়ার চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডার মামলার আসামি ১৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করে আলামত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব-৮) সদস্যরা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় র‌্যাব-৮ এর সদর দফতর থেকে পাঠানো এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, চলতি বছরের ৭ ডিসেম্বর ভোরে বানারীপাড়ায় কুয়েত প্রবাসী আব্দুর রবের বাড়িতে তিনজনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

এই লোমহর্ষক ঘটনার রহস্য উন্মোচনে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব-৮ ছায়া তদন্ত শুরু করে। এ সংক্রান্ত গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ ও র‌্যাব-৮ যৌথ অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার সন্দেহে জাকির হোসেন (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে। প্রথমে জাকির হোসেন ওই বাড়ির নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। উদ্ধার হওয়া তিন মরদেহ। প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জিন হাজির ও ঝাড়-ফুঁকের মাধ্যমে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করে বলে প্রচার করেন। তিনি বাড়ির সবার বিশ্বস্ততা অর্জন করেন বলে জানান। এর সুযোগ নিয়ে বাড়িতে জিন আসবে বলে রাতে দরজা খোলা রাখার কথা বলেন তিনি। রাতে ওই বাড়িতে কৌশলে প্রবেশ করে ও একজন সহযোগীকে নিয়ে পর্যায়ক্রমে কুয়েত প্রবাসী আব্দুর রবের মা, বোন জামাই শফিকুল আলম ও খালাতো ভাই ইসুফকে হত্যা করেন। পরবর্তীতে র‌্যাব-৮ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও জাকিরের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডের অপর আসামি মো. জুয়েল হাওলাদারকে (৩৪) বরিশালের কোতোয়ালি মডেল থানাধীন পশ্চিম মতাশুর মুহুরী কান্দা এলাকা থেকে আটক করে।

আরও পড়ুন>>বরিশালে একই পরিবারের তিনজনের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা

আকট দু’জনই প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এরপর জাকির হোসেন ও জুয়েল হাওলাদারের স্বীকারোক্তি মতে র‌্যাব-৮ ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে জাকিরের ভাড়াবাড়ি সাগরদীর মুন্সিবাড়ী থেকে হত্যাকাণ্ডের পর ওই বাড়ি থেকে ছিনতাই করে আনা স্বর্ণালঙ্কার, তিনটি মোবাইলফোন ও একটি চাকু উদ্ধার করে। পরে আটক আসামি ও আলামতগুলো বানারীপাড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

র‌্যাবের অধিনায়ক আতিকা ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে যে, লোভের বশবর্তী হয়ে তারা এ ধরনের ঘৃণ্য কাজ করেছেন।

অপরদিকে বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুরের একটি বাড়ি থেকে শাশুড়ি, মেয়ে জামাইসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

রোববার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করে বানারীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) জাফর আহম্মদ জানান, নিহত মরিয়ম বেগমের ছেলে ও বাড়ির মালিক কুয়েত প্রবাসী আব্দুর রবের ভাই সুলতান মাহমুদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন।

তিনি আরও জানান, ওই মামলায় কোনো নামধারী আসামি করা হয়নি, তবে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করলেও নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা নেই। পাশাপাশি এরইমধ্যে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার পূর্ব রায়পাশা গ্রামের চুন্নু হাওলাদারের ছেলে জাকির হোসেন ও তার সহযোগী জুয়েলকে আটক করা হয়েছে।

কিছু মালামালও উদ্ধার করা হয়েছে। যাদের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের কাছে সোপর্দ করা হবে বলেও জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।

তবে, তাদের বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করা হবে কিনা সে বিষয়ে এখনো কিছু জানাতে চাননি তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৯
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।