ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

খাগড়াছড়ি হানাদারমুক্ত দিবস ১৫ ডিসেম্বর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯
খাগড়াছড়ি হানাদারমুক্ত দিবস ১৫ ডিসেম্বর ছবি: প্রতীকী

খাগড়াছড়ি: ১৫ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ি হানাদারমুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে পানছড়ির পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাম্পে আক্রমণ করেন মুক্তিযোদ্ধারা। আধা ঘণ্টা গোলাগুলির পরে থেমে থেমে আরও কয়েকবার গোলাগুলি চলে। ভোরে খবর আসে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পালিয়েছে।

পরে পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাম্প দখলে নিয়ে সেখান থেকে পানছড়ি বাজারে রওয়ানা দেন মুক্তিযোদ্ধারা। ১১ ডিসেম্বর পানছড়ি শত্রুমুক্ত কিনা জানতে চার্জ করা হলে নিশ্চিত করা হয় পানছড়ি শত্রুমুক্ত।

১৩ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের অভিমুখে রওয়ানা দেন মুক্তিযোদ্ধারা। পথে ভাইবোনছড়া এলাকায় এসে পাকিস্তানীদের অবস্থান জানতে পেরে দুইভাগে বিভক্ত হয়ে যান তারা। দুপুর আড়াইটায় ভাইবোনছড়া বাজারের পূর্ব ও পশ্চিম দিকে দুইভাগে মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান নেন। তাদের অবস্থান জানতে পেরে পাকিস্তানি সেনারা হামলা করে।  

কিন্তু ওই দিন ভাইবোনছড়া হাট-বাজার হওয়ায় স্থানীয়দের ক্ষতি হতে পারে এমন ভাবনায় পিছু হটে এক কিলোমিটার দূরে অবস্থান নেন মুক্তিযোদ্ধারা। পরে রাত আনুমানিক দেড়টায় দুটি ভাগে ভাগ হয়ে পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর হামলা শুরু করেন তারা। মুক্তিবাহিনীর পক্ষ থেকে প্রায় ২০ মিনিট ধরে গোলাগুলি চলে।

তবে, পাক বাহিনীর পক্ষ থেকে কোন গোলাগুলি হয়নি। ভোর সাড়ে ৫টায় খবর আসে রাতেই পাকিস্তানি বাহিনীর সদস্যরা পালিয়েছে। দিনটি ছিল ১৪ ডিসেম্বর। ওইদিন দুপুরে মুক্তিযোদ্ধারা খাগড়াছড়ি শহরের উদ্দেশে রওয়ানা দেন। পথে কুকিছড়ায় গাছবান এলাকায় বিকেল ৪টার দিকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর হামলা করে। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ চলে প্রায় ৪০ মিনিট। পরে শত্রুরা গোলাগুলি বন্ধ করে পালিয়ে যায়।

পরবর্তীকালে সেখান থেকে স্বনির্ভর বাজারে এসে চার প্লাটুন মুক্তিযোদ্ধা তিন ভাগে ভাগ হয়ে শহরের অভিমুখে রওয়ানা দেন।

১৪ ডিসেম্বর দিনগত রাত ৩টায় খাগড়াছড়ি মহকুমা শহরে তিন দিক থেকে ৬০ শতাংশ এলাকা শত্রুমুক্ত করা হয়।

ওই দিন রাতে সতর্কতার সঙ্গে মহকুমার কেন্দ্রস্থলে প্রবেশ করতে থাকেন মুক্তিযোদ্ধারা। তখন ১২ জনের একটি গ্রুপ মাইনস চার্জ করতে করতে শহরের দিকে এগিয়ে যান। ১৫ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খবর আসে, হানাদার বাহিনী রাতেই খাগড়াছড়ি বাজার লুটপাট করে মহালছড়ির দিকে পালিয়ে গেছে। অন্যদিকে, মহালছড়িতে সম্মুখযুদ্ধে নিহত হন ক্যাপ্টেন আফতাবুল কাদের।

১৫ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় খাগড়াছড়িতে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেছিলেন তৎকালীন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক প্রয়াত দোস্ত মোহাম্মদ চৌধুরী। এ সময় গ্রুপ কমান্ডার অশোক চৌধুরী বাবুল, মংসাথোয়াই চৌধুরী, মোবারক মাস্টার, জুলু মারমাসহ অনেকেই সঙ্গে ছিলেন। সেদিন থেকে খাগড়াছড়ি হানাদারমুক্ত দিবস পালিত হয়।

 বাংলাদেশ সময়: ১২৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯
এডি/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।