ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পুলিশের উপর অতর্কিত হামলার পরিকল্পনা আনসারুল্লাহর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯
পুলিশের উপর অতর্কিত হামলার পরিকল্পনা আনসারুল্লাহর

ঢাকা: আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য বিশেষ করে পুলিশের উপর হামলার পরিকল্পনা করছিল নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সদস্যরা। কোনো ইলেক্ট্রিক ডিভাইস নয় বরং দুই-তিন জনের গ্রুপে বিভক্ত হয়ে চাপাতি দিয়ে পুলিশ সদস্যদের উপর আকস্মিক হামলার পরিকল্পনা করছিল তারা।

বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর শাহআলী থানা এলাকা থেকে এবিটির চার সক্রিয় সদস্যকে আটক করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৪)। আটকদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফরেনসিক করে পুলিশের উপর হামলার এ পরিকল্পনার কথা জানা গেছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক।

আটকরা হলেন- মোহাম্মদ আরিফুল করিম চৌধুরী ওরফে আদনান চৌধুরী (৩৮), মেহেদী হাসান শাকিল ওরফে বাবু (২০), আব্দুল আল মামুন ওরফে আসাদুল্লাহ হিল গালিব (১৮) ও নাজমূল হাসান (২৯)। এসময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের উগ্রবাদী বই, লিফলেট, উগ্রবাদী ডিজিটাল কনটেন্ট, বিভিন্ন ইলেক্ট্রিক ডিভাইস ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৪ অধিনায়ক এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, আটকদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফরেনসিক করে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য বিশেষ করে পুলিশের উপর হামলার পরিকল্পনার তথ্য পেয়েছি। কোনো ইলেক্ট্রিক ডিভাইস নয়, বরং চাপাতি দিয়ে পুলিশ সদস্যদের টার্গেট করে হামলার পরিকল্পনা ছিল তাদের। তারা দু’তিনজন মিলে আলাদা গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পুলিশের উপর অতর্কিত হামলা করে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিল।

সম্প্রতি কয়েক মাসে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের এই গ্রুপের ২৩ জন সদস্য র‌্যাবের হাতে গ্রেফতারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা এই গ্রুপের ২৩ জন সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। এই গ্রুপের শেষ ব্যক্তি পর্যন্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

গ্রেফতারদের মধ্যে দু’তিনজনকে পেয়েছি যারা হরকাতুল জিহাদ (হুজি) থেকে দল পরিবর্তন করে আনসার আল আসলাম বা আনসারুল্লাহ বাংলা টিমে যোগ দেয়।

বুধবার রাতে আটক চারজনের মধ্যে আরিফুল করিম ঢাকার এক অংশের আমির ছিলেন। তিনি ২০১৫ সালেও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেফতার হয়ে এক বছর ১১ মাস জেল খেটে বের হন। আগে হরকাতুল জিহাদের সদস্য ছিলেন আরিফুল। জেল থেকে বের হয়ে এবিটিতে যোগ দেন। তিনি অনলাইনে শীর্ষ স্থানীয় জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন।

আরিফুল কম্পিউটার সায়েন্সে চার বছরের ডিপ্লোমা শেষ করে একটি ব্যাংকের আইটি বিভাগে চাকরি করতেন। জঙ্গিবাদে জড়িত থাকার অপরাধে চাকরিচ্যুত হলে পরে অনলাইনে কম্পিউটার সামগ্রী বিক্রির আড়ালে জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন।

মেহেদী হাসান বাবু প্যারা মেডিক্যালে পড়াশোনা করতেন। গত দুই বছর ধরে তিনি এবিটির সঙ্গে যুক্ত। আল মামুন আলীম দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনিও দু’বছর ধরে যুক্ত। নাজমুল হাসান একটি ডেভেলপার কোম্পানিতে চাকরি করতেন। অনলাইনে তিনি ছদ্মনাম ব্যবহার করে জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। তারা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য সব সময় গোপন অ্যাপস ব্যবহার করতেন।

চারজনকে আটকের সময় আরও কয়েকজন পালিয়ে যায়। পলাতকসহ এই গ্রুপের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯
পিএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।