ঢাকা, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মোবাইল টাওয়ারে চিলের বংশ বিস্তার, ছাদ বাগানে ফল-সবজি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০২০
মোবাইল টাওয়ারে চিলের বংশ বিস্তার, ছাদ বাগানে ফল-সবজি ...

ঢাকা: মোবাইল টাওয়ার বা বিটিএস থেকে নির্গত রেডিয়েশনের কারণে জীব এবং উদ্ভিদের ক্ষতির যে গুঞ্জন তা উড়িয়ে দিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।

বিটিআরসি’র একজন কর্মকর্তা দাবি করেছেন, তিনি দেখেছেন এক ভবনের ছাদের মোবাইল টাওয়ারে চিল বাসা বানিয়ে বছরের পর বছর বংশ বিস্তার করছে এবং ওই ছাদের বাগানে সবজি ফলছে।

বিটিআরসির মহাপরিচালক (স্পেকট্রাম) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহফুজুল করিম মজুমদার বলেন, টাওয়ারের রেডিয়েশন নিয়ে অনেক কথাবার্তা হয়েছে, আমাদের কাছে প্রায়ই আসে, অপারেটরদের অনুরোধ করা হয় যে বাসা বা যে ভবনের ওপরে টাওয়ার বসানো হয়েছে তা সরিয়ে নেয়া হয়।

কারণ, রেডিয়েশন ইফেক্ট হয়।

তিনি বলেন, আমরা দেশব্যাপী আমোদের টাওয়ারের রেডিয়েশন মেজারমেন্ট করছি, আমার এখনও টিম আছে রংপুরে। গতমাসে সিলেট, রাজশাহীসহ বড় বড় শহরে করেছি। আমরা কোথাও রেডিয়েশন পাইনি যেটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। আমাদের স্ট্যান্ডার্ড সেট করা আছে আইটিইউ-বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার, তার থেকে অনেক লোয়ার মার্জিনে রেডয়েশন হয়।

কিন্তু মানুষের মধ্যে একটা বদ্ধমূল ধারণা যে, এটা দিয়ে অনেক বড় ক্ষতি হচ্ছে। তার প্রেক্ষিতে বিভিন্ন জায়গাতে টাওয়ার বসাতে দিচ্ছে না এবং বিদ্যমান টাওয়ার তুলে ফেলতে বলা হচ্ছে। অপারেটরদের করার কিছু থাকবে না, যদি ওনারা টাওয়ার নামিয়ে ফেলেন। তখন নেটওয়ার্ক কোয়ালিটি আরো ড্রপ করবে। তখন আমাদের আর কন্ট্রোলে থাকবে না।

বিটিআরসি’র তরঙ্গ বিভাগের এই কর্মকর্তা বলেন, সত্যটা প্রকাশ করা দরকার যে, এখন পর্যন্ত আমরা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক রেডিয়েশন খুঁজে পাইনি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, আইটিইউ, আইসিএনআইএফপি’র স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষতিকারক কিছু পাইনি।

এসময় বিটিআরসি চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, আমরা মানুষকে বোঝাতেই পারছি না।
 
মোবাইল নেটওয়ার্কের কারণে বন্ধ্যাত্ব হচ্ছে, ল্যাপটপে কাজ করার কারণে ছেলেদের স্পাম কোয়ালিটি কমে যাচ্ছে- এ সম্পর্কিত প্রশ্নে মাহফুজুল করিম বলেন, ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরে যেখানে টেলি ডেনসিটি বেশি সেখানে আমরা ড্রাইভ করেছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত ভয়ের বা ক্ষতিকারক কিছু খুঁজে পাইনি। আমরা বিটিএসের রেডিয়েশন চেক করি, কিন্তু মোবাইল হ্যান্ডসেট বা ল্যাপটপের রেডিয়েশন চেক করি না।
 
রেডিয়েশনের কারণে বন্ধ্যাত্ব বাড়ছে বা ডাব গাছে পানি আসে না- এমন প্রসঙ্গে টেনি তিনি আরো বলেন, আমি নিজে দেখেছি টাওয়ারের ওপরে চিল বাসা বানিয়েছে এবং বছর বছর ধরে আছে এবং বংশ বৃদ্ধি করে যাচ্ছে। বিটিএসের রেডিয়েশনের কারণে ক্ষতি হলে চিল বংশ বৃদ্ধি করতে পারতো না। আমি সিলেট শহরে নিজে দেখে এসেছি।

প্রমাণ হিসাবে ওই টাওয়ারের লোকেশন দিতেও চেয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, চিলের বাসা কেউ ভাঙতে পারে না, এতো ওপরে। ওই ভবনেরই ছাদে বাগান করেছে এবং সেখানে খুব সুন্দর সবজি-ফল হয়েছে; বেগুন ধরেছে। বাজারে যে রকম লম্বা লম্বা বেগুন ওই রকম বেগুন দেখেছি। কাজেই যদি আমরা বলি এটা হচ্ছে, এটা আমরা মানতে পরিনি।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কোথাও বলিনি যে টাওয়ার নামিয়ে ফেলেন। কিন্তু আমাদের কাছে অপারেটর বলে যে অমুক জায়গা থেকে অনুরোধ আসতেছে, ব্যক্তিগত মালিকানার ভবন থেকে টাওয়ার সরিয়ে নেন। এরকম যখন আসে তখন আমরা চেক করে নেই যে আসলে রেডিয়েশনে কী আছে? একজন বাসার মালিক তার অবশ্যই তার অধিকার আছে উনি বলতেই পারেন যে আমার বাসা থেকে সরিয়ে ফেলেন। সেই হিসাবে আমরা চেক করছি।

বাংলাদেশ সময়: ০১৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০২০
এমআইএইচ/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।